খবর প্রকাশিত: ৩০ এপ্রিল, ২০২৫, ০৬:২৬ এএম
গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির ঢাকার মহাসমাবেশকে ঘিরে সংঘাতের ঘটনায় দলটির জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে দলছুট শাহজাহান ওমরের অপরাধ এক করতে চায় না আওয়ামী লীগ। ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘একটা অপরাধের সঙ্গে আরেকটা অপরাধের পার্থক্য বুঝে নিতে হবে।’ আজ শনিবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। শাহজাহান ওমর জামিন পেয়ে পরের দিনই আওয়ামী লীগে যোগ দিলেন। আর বিএনপির অন্য নেতারা এখনো জেলে আছেন। এটা কাকতালীয় কি না, এ প্রশ্ন করেন একজন সাংবাদিক। জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘অন্যান্য বিএনপির যে নেতারা আছেন, এখানে অপরাধের সঙ্গে বিষয়টা তুলনা করতে হবে। গত ২৮ অক্টোবর প্রকাশ্য দিবালোকে পুলিশ হত্যার দায়ভারে জেলে যেসব হেভিওয়েট নেতারা আছেন, তাঁরা এড়াতে পারেন না। তাঁদের উপস্থিতিতে এ ঘটনা ঘটেছে। প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা, পুলিশ হাসপাতালে হামলা, একজন পুলিশকে পিটিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে মির্জা ফখরুল, মির্জা আব্বাসের চোখের সামনে। একটা অপরাধের সঙ্গে আরেকটা অপরাধের পার্থক্য বুঝে নিতে হবে।’ বিএনপির বহিষ্কৃত ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমরকে আওয়ামী লীগদলীয় মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এটা তাঁর (শাহজাহান ওমর) ব্যক্তিগত স্বাধীনতা। এটাও গণতন্ত্র।
আমার এ দল ভালো লাগে না, আরেক দলে যাব, সেটা তো আমরা হস্তক্ষেপ করিনি। তিনি স্বেচ্ছায় এসেছেন, তা তাঁর বক্তব্যে বলেছেন।’ শাহজাহান ওমরকে পুলিশ হত্যা মামলা ও প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলার মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তিনি জামিনে এসে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়েছেন। সে ক্ষেত্রে উনি আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারী কি না, এমন প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘অনুপ্রবেশ তো জোর করে আসা। কিন্তু তিনি তো স্বেচ্ছায় এসেছেন। এখানে গণতান্ত্রিক বিধিব্যবস্থার লঙ্ঘন হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় দল পরিবর্তন করা যায়। তিনি বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে এসেছেন। এটা কি অপরাধ?’ শাহজাহান ওমরের এলাকায় (ঝালকাঠি-১) আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতারা তো বঞ্চিত—এমন এক প্রশ্নে কাদের বলেন, ‘দলের সিদ্ধান্ত দল নিতে পারে। দলীয় নেতা-কর্মীরা দলের নেতা শেখ হাসিনার প্রতি আস্থাশীল, শ্রদ্ধাশীল। তাঁর নেতৃত্বে কোনো সিদ্ধান্ত হলে সেটা মেনে নেওয়ার মানসিকতা নেতা-কর্মীদের সর্বত্রই আছে।’ বিএনপির রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ বিভক্ত করতে যায়নি বলে দাবি করেন কাদের।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কোনো দলকে ভাগ করা আমাদের নীতি নয়। ভুল নীতির জন্য বিএনপির মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপিকে ভাঙতে পারেনি, এ কথা যাঁরা বড় গলায় বলেন, উঁচু গলায় বলেন, তাঁরা এ কথা সত্য বলছেন না। আজকে “তৃণমূল বিএনপি” এত প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে, এরা সকলেই বিএনপির লোক। বেশির ভাগই বিএনপি থেকে আসা নেতা-কর্মী।’ বিএনপি বলছে, ব্ল্যাকমেল করে তাদের নেতাদের নির্বাচনে আনা হচ্ছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ব্ল্যাকমেল করে কাকে নেওয়া হচ্ছে? বিএনপির নেতৃত্ব কি এতই দেউলিয়া যে ব্ল্যাকমেল করলে চলে আসবে? রাজনৈতিক পরীক্ষায় এতই ব্যর্থ যে কারও ব্ল্যাকমেইলিংয়ে প্রলুব্ধ হয়ে অন্য দলে যাবে?’ নির্বাচনে নিবন্ধিত বেশির ভাগ দলই অংশ নিচ্ছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশে যাঁরা ভোটার, টার্নআউট নিয়ে সন্দেহ পোষণ করেন, ইতিমধ্যে আমরা যে দৃশ্যপট নির্বাচনে দেখতে পাচ্ছি, তাতে কিন্তু রেকর্ডসংখ্যক ভোটার উপস্থিতি দেখতে পাব।’