খবর প্রকাশিত: ২৮ এপ্রিল, ২০২৫, ০৮:৫৩ এএম
একটা গণমাধ্যম কিভাবে চলবে তা ঠিক করেন সেই প্রতিষ্ঠানের সম্পাদক। আর সেই সম্পাদকরাই যখন হুটহাট করে সরে যাচ্ছেন কিংবা সরিয়ে দেয়া হচ্ছে তখন মনে নানা ধরনের প্রশ্ন জন্ম নিচ্ছে। বাংলাদেশে গত এক সপ্তাহে নানা কারণে বড় তিনটি গণোমাধ্যমের তিন জন সম্পাদক পদ ছেড়েছেন বা ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। এই তিন জনের এক জনকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে, একজনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে এবং একজন নিজে পদ ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এই তিন সম্পাদকের বিষয় এখন বাংলাদেশের গণমাধ্যমে আলোচনায় রয়েছে। অনেকেই সম্পাদকদের এমন ঘটনায় কিছুটা বিব্রতও। তবে সরাসরি এটা নিয়ে কেউই কিছু বলতে রাজি হননি। প্রথম ঘটনাটি ঘটে এ মাসের চার নভেম্বর। হঠাৎ করেই জানা যায় দৈনিক কালবেলার প্রধান সম্পাদক আবেদ খানকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, তাকে দেশবিরোধী ও প্রতিষ্ঠানবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগেই চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর “আসছে মার্কিনি ঝড়” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন লিখে তিনি লিড করা নিয়ে ঝামেলায় জড়ান সম্পাদক সন্তোষ শর্মার সাথে। তার কথা না শোনায় তিনি দ্বারস্থ হোন গণভবনের। সেখানে গিয়ে তিনি সন্তোষ শর্মার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। পরে তার প্রতিবেদন এবং সন্তোষ শর্মার বিরুদ্ধে অভিযোগ মিথ্যা প্রমানিত হলে , গণভবন থেকেই তাকে সরিয়ে দিতে বলা হয়। এদিকে এর দুই দিন পর ছয় নভেম্বরই আলোচনায় আসেন সিকদার গ্রুপের মালিকানাধীন বাংলাদেশ পোস্টের সম্পাদক শরীফ শাহাব উদ্দিন। প্রতিষ্ঠানটির সংবাদকর্মী-কর্মচারীরা তার বিরুদ্ধে দূর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ তুলে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন তাকে। শুধু অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেই ক্ষান্ত হননি প্রতিষ্ঠানটির সাংবাদিক-কর্মচারীরা। শরীফ শাহাব উদ্দিনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার একটি সংবাদও তারা প্রকাশ করে বাংলাদেশ পোস্টের প্রিন্ট এবং অনলাইন ভার্সনে।
অপরদিকে গতকাল ৭ তারিখ আলোচনায় আসে, বিডি নিউজ ২৪ ডট কমের প্রধান সম্পাদকের পদ। অনলাইন গণমাধ্যমটির প্রধান সম্পাদকের পদ ছাড়ার ঘোষণা দেন তৌফিক ইমরোজ খালিদি। সেই জায়গায় নতুন সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব নিচ্ছেন বিশ্বদীপ দাশ বলেও জানা গেছে। অনেকেই বিডি নিউজের এই পরিবর্তনকে স্বাভাবিক ভাবেই দেখছেন। আবার কেউ কেউ বলছেন, এটা একটা নিয়মতান্ত্রিক পরিবর্তন। তবে অনেকেই মনে করছেন, দূর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত তৌফিক ইমরোজ খালিদি ‘সেফ প্যাসেজ’ খুজছেন। আবার কেউ কেউ মনে করছেন, কিছুদিন আগে ওয়েবসাইট বন্ধের যে ঘটনা ঘটেছে, তার রেশ ধরেই ইমরোজ খালিদিকে সরে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। এই তিন সম্পাদকের বিষয় নিয়ে আমরা বেশ কয়েকজন সম্পাদকের সাথে কথা বলার চেষ্টা করি কিন্তু, কেউ সরাসরি মুখ খুলতে রাজি হয়নি। কেউ কেউ নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, এই তিন সম্পাদক তাদের কাজের জন্য পদ ছাড়ছেন বা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন। এখানে অন্য কিছু ভাবার বা বলার সুযোগ নেই। তবে দেশের সম্পাদকদের জন্য তাদের কর্মকাণ্ড বিব্রতকর।