NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, সোমবার, জুন ১৬, ২০২৫ | ২ আষাঢ় ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
" ইসরায়েল আন্তর্জাতিক পারমাণবিক স্থাপনা আইন ভঙ্গ করেছে এবং শীর্ষ ইরানি বিজ্ঞানীদের হত্যা করেছে” ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের মধ্যে বৈঠক যুক্তরাষ্ট্রের ২০টি হলে শাকিব খানের ‘তান্ডব’র শুভ মুক্তি Iran Attack, a Foggy Peace and Truce Deal in Gaza - Dr Pamelia Riviere ফুলেল শুভেচ্ছায় অভিনন্দিত লায়ন শাহ নেওয়াজ পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাসহ ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরাইল ভারতীয় বিধ্বস্ত উড়োজাহাজে কারও জীবিত থাকার সম্ভাবনা নেই বিয়ানীবাজারবাসীদের উদ্যোগে সাংবাদিক ও লেখক মুস্তাফিজ  শফি সংবর্ধিত ট্রাম্পের নতুন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর, যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন উত্তেজনা চরমে বিক্ষোভে উত্তাল লস অ্যাঞ্জেলেসে ন্যাশনাল গার্ড বাহিনী, ডেমোক্র্যাটদের ক্ষোভ
Logo
logo

আসাদ চৌধুরী ভাইকে ঘিরে দিন যায় রাত  যায় আবার দিন আসে--- আকবর হায়দার কিরন


খবর   প্রকাশিত:  ১৬ জুন, ২০২৫, ০১:২২ পিএম

আসাদ চৌধুরী ভাইকে ঘিরে দিন যায় রাত   যায় আবার দিন আসে--- আকবর হায়দার কিরন

অক্টোবর ৫ তারিখ ভোর, চোখ খুলে যথারিতী ফোনে তাকালাম । কবি আসাদ চৌধুরী আর নেই। মনে হলো আবার পরমপ্রিয়জনকে হারালাম। প্রায় ৪৫ বছর ধরে অনেক কাছের এক আপনজন তিনিও আমাকে যেন আবার এতিম করে চলে গেলেন প্রিয় আসাদ ভাই। তিনি ছিলেন যেন আমার একজন বড়ভাই। 

ছোটবেলায় ঢাকা বেতারের একটি বিশেষ অনুস্ঠান ছিলো দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ডাকে পাঠানো লেখা নিয়ে । উপস্থাপন করতেন কবি আসাদ চৌধুরী। তাঁর কন্ঠ এবং কথা বলার স্টাইল আমি খুব পছন্দ করতাম। বড় হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় এবং রেডিও ক্লাব জীবনে বাংলা একাডেমীর বইমেলায়, শাহবাগের বেতারের স্টুডিওতে  সবখানে দেখা হতো এই প্রানের আলোকবর্তিকা আসাদ ভাইকে। সোভিয়েত কালচারাল সেন্টার, জার্মান কালচার, আমেরিকান বাইসেন্টেনিয়াল হল , ভারতীয় কালচার - সবখানে আমাদের রেডিও ক্লাবের আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুস্ঠানে আসাদ ভাইকে ছাড়া কল্পনা করতে পারতামনা।ডয়েচে ভেলে বাংলা বিভাগে তাঁর যাওয়ার খবরটি আমার কিযে যারপরনাই আনন্দের ছিলো। তখন আমি গভীর ঘনিস্ঠতা ছিলো এই বিভাগের জন্মলগ্ন থেকে। বেশ কয়েকবার বাংলা বিভাগের এনালিস্ট হিসেবে কাজও করেছি ঢাকায় বসে। তখন কোলনে জার্মান বেতার তরংগ ব্রডকাস্ট হতো। রাইন নদীর তীরে সেই বিশাল ভবনে বাংলা বিভাগ শুরু করেছিলেন  ভেগ মায়ার, আহমেদ রফিক, আবদুল্লাহ আল ফারুক, শুভরন্জন দাশগুপ্ত, শুভ্রা দাশগুপ্তা এবং আরও ক’জন। এরপর যোগ দিয়েছিলেন নাজমুন নেসা, সোহেল সামাদ ও আবদুস সাত্তার । আসাদ ভাই ৮৫ সালে বাংলা বিভাগে যোগ দিয়ে অন্য এক ভিন্ন মাত্রায় নিয়ে যান। তাঁর কন্ঠ শোনার জন্য অসংখ শ্রোতা অপেক্ষায় থাকতেন । জার্মানীতে যাওয়ার আগে তাঁর বাসায় গিয়েছিলাম।সাহানা ভাবীর আতিথেয়তা এখনো মনে পড়ে। আসাদ ভাইয়ের ছেলে আসিফ ও মেয়ে নুসরাত তখন একেবারে ছোট্ট ছিলো।সময় চলে গেছে অনেকদিন দেশে এবং প্রবাসে। চোখে দেখা না হলেও হৃদয় ও আত্মার সম্পর্ক কখনোই বিচ্ছিন্ন হয়না। ২০০০ সালের দিকে একবার সাহানা ভাবীকে নিয়ে এলেন নিউ ইয়র্কে । নিউ ইয়র্কের সবচেয়ে পুরনো বাংলা ভাষার টিভি ছিলো ‘ বাংলা টিভি’ । মির শিবলী ভাইয়ের টিভির বিশেষ অনুস্ঠান ‘আলাপন’ এ যোগ দিয়েছিলেন আসাদ ভাই, সাহানা ভাবী , সাথে ছিলো পানের ডিব্বা ! তাঁর সাথে সেই বিশেষ আড্ডায় আমারও সৌভাগ্য ছিলো। আরও ছিলেন সাংবাদিক মিজানুর রহমান, ডিস্কো রেকডিং এর শাহীন রহমান, মীর শিবলী ও রতন। বইমেলাতেও যখনই এসেছেন তখন সবাই যেন তাঁকে ঘিরে রাখতেন ভালোবেসে। সবসময় তিনি  থাকতেন হাসিখুশী ও মায়া মমতাভরা সেই মুখ । গেলো বছর নভেম্বর নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের জুইশ সেন্টারে আয়োজিত এক বিশেষ অনুস্ঠানে যোগ দিলেন। তাঁকে দেখে মনে হলো কতো যুগ পরে এলেন। আমি বেশ পেছন দিকটায় বসেছিলাম। এক ফাঁকে আমাকে দেখেই উচ্ছসিত হয়ে বললেন‘ কিরন কেমন আছো’ ! বেশ ক’বছর পর , করোনাকাল শেষে এবং অসুস্থতার পর বেঁচে থাকা এই আমাকে চিনতে পারলেন প্রিয় আসাদ ভাই। আমার পরম সৌভাগ্য। কতোদিন পর তাঁকে হৃদয় ও মন দিয়ে স্পর্শ করলাম। সেদিন মনে হচ্ছিলো আর হয়তো কোনদিন দেখা হবেনা। প্রকৃতির নিয়মে আমরা চলে যাবো, তিনি চলে গেলেন। কিন্তু কিছু কিছু মানুষকে যেতে দিতে ইচ্ছে করেনা কিন্তু যেতে দিতেই হয়।

৬ অক্টোবর , ২০২৩