খবর প্রকাশিত: ২৯ এপ্রিল, ২০২৫, ০৪:৫০ এএম
সৌদি আরব থেকে ঘুরে এসে মোঃ আলী খান বাবুল ; আলহামদুলিল্লাহ এবার হজ্জ পালন করতে গিয়ে এই বরকতময় কুপটি দেখার এবং পানি পান করার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। ঐতিহাসিক বদরের যুদ্ধ শেষে রাসুল (সাঃ) সাহাবিদের নিয়ে মদিনার দিকে রওনা হয়েছেন। বদর প্রান্তর এবং মদিনার মাঝামাঝি এক স্থানে ক্লান্ত পরিশ্রান্ত রাসুল (সাঃ) ও সাহাবাগন এক জায়গায় যাত্রাবিরতি করেন। কাফেলায় তখন চলছিল পানির সংকট। তপ্ত মরু ও পাথুরে পাহাড়ি এলাকায় পানি পাওয়া ছিল বেশ দুষ্কর। যে কারণে সাহাবারা পিপাসায় অস্থির কাতর হয়ে পড়েছিলেন। কিছু সাহাবি অসুস্থতাও অনুভব করতে লাগলেন। তখন সাহাবারা রাসুল (সাঃ)-এর কাছে পানির সংকট ও পিপাসার কথা জানালেন।তখন রাসুল (সাঃ) একটি পাথরের ওপর বসা ছিলেন। পাথরের পাশে একটি কূপ ছিল, সাহাবিরা কূপ থেকে পানি উত্তোলন করলেন। কিন্তু পানি পান করতে গিয়ে তারা বুঝলেন, এ পানি মাত্রাতিরিক্ত লবণাক্ত। বিষয়টি রাসুল (সাঃ)-এর কাছে জানানো হলো তখন রাসুল (সাঃ) নিজের থুথু মোবারক কূপের মধ্যে নিক্ষেপ করলেন। মুহূর্তেই কূপের গভীরে থাকা পানি অনেকটি ওপরে ওঠে আসে এবং লবণাক্ত পানি মুহূর্তেই সুমিষ্ট পানিতে রূপান্তরিত হয়ে যায়। যা পান করতেই সাহাবারা সতেজতা ও সুস্থতা অনুভব করলেন।
এটি প্রিয় নবী (সাঃ)-এর অসংখ্য মোজেজা থেকে জীবন্ত একটি মোজেজা। সেই দেড় হাজার বছর পূর্বে আবিষ্কৃত এবং রাসুলু (সাঃ)-এর থুথু মোবারকের বরকতে লবণাক্ত পানি থেকে মুহূর্তেই সুমিষ্ট পুষ্টিকর পানিতে রূপান্তরিত হওয়া ঐতিহাসিক সেই কূপের পানি এখনো জীবানুমুক্ত ও রোগ নিয়ন্ত্রক পানি হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে।
বর্তমানে সেখানে কূপ সংলগ্ন একটি ছোট্ট একটি মসজিদ রয়েছে। জায়গাটি মদিনা থেকে ১০২ কিলোমিটার দূরে বদর যাওয়ার পথে মূল সড়ক থেকে হাতের ডানে সাত কিলোমিটার ভেতরে।এই কূপের পানি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া গেছে, তা সুমিষ্ট, স্বচ্ছ ও জীবানুমুক্ত। অথচ আরবের নানা অঞ্চলে এ জাতীয় অসংখ্য প্রাচীন পানির প্রাকৃতিক কূপ থাকলেও বেশিরভাগ কূপের পানি লবণাক্ত। প্রাচীনযুগে আবিষ্কৃত অধিকাংশ কূপ কালের পরিক্রমায় ধ্বংস হয়ে গেছে। হারিয়ে গেছে অস্তিত্ব। শুকিয়ে গেছে পানি। অথচ বীরে শিফা সেই থেকে আজ অবধি স্বমহিমায় টিকে আছে।
‘বীর’ মানে কূপ। আর ‘শিফা’ মানে আরোগ্য। রাসুল (সাঃ)-এর থুথুর বরকতে আল্লাহর রহমতে এই কূপের পানি পান করে মানুষ এখনো নানা জটিল ও কঠিন রোগ থেকে মুক্তি পান। বিশেষ করে কিডনি ও হার্টের রোগ থেকে। যে কারণে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এসে এই কূপ থেকে পানি সংগ্রহ করে নিয়ে যান।
এটি একটি বরকতময় কূপ। পৃথিবীর বুকে সবচেয়ে দামি ও স্বাস্থ্যকর পানির তালিকায় প্রথমে রয়েছে পবিত্র জমজমের পানি। তারপর রয়েছে বীরে শিফার পানি।