NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, মঙ্গলবার, এপ্রিল ২৯, ২০২৫ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩২
Logo
logo
বাড়তি কয়েক ঘণ্টা ঢাকা থাকছেন ডোনাল্ড লু

মার্কিন প্রতিনিধিদল আসছে আজ ঢাকায়


খবর   প্রকাশিত:  ২৯ এপ্রিল, ২০২৫, ০২:৪৯ এএম

মার্কিন প্রতিনিধিদল আসছে আজ ঢাকায়

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়ার নেতৃত্বাধীন বাইডেন  প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল ঢাকা আসছেন আজ। সন্ধ্যায় দিল্লি হয়ে বাংলাদেশে পৌঁছাবেন তারা। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বিমানবন্দরে সশরীরে উপস্থিত থেকে মার্কিন অতিথিদের অভ্যর্থনা জানাবেন। ওই প্রতিনিধিদলে স্টেট ডিপার্টমেন্টের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি বহুল আলোচিত ডোনাল্ড লু রয়েছেন।    কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, গণতন্ত্র, মানবাধিকার বিশেষত আসন্ন নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য করার বিষয়ে আলোচনা করতে আসছে মার্কিন প্রতিনিধিদলটি। উজরার নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দলটি দু’দিন আগে ভারতে এসেছে। সেখানে অনানুষ্ঠানিক পর্বে বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে বলে খবর বেরিয়েছে। উজরার এটা প্রথম সফর হলেও ডোনাল্ড লু’র এটি তৃতীয় সফর। বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা দিলে মার্কিন ভিসা দেয়া হবে না এমন শর্তজুড়ে গত মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের স্বতন্ত্র ভিসা নীতির ঘোষণার পর এটাই দেশটির জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধি দলের প্রথম ঢাকা সফর। সঙ্গত কারণেই প্রতিনিধিদলের সফরে মুখ্য আলোচ্য হবে নির্বাচন। বিশেষত: নির্বাচনটি কোন ফর্মে অনুষ্ঠিত হবে। 

 সূত্র এ-ও জানিয়েছে, মার্কিন যে প্রতিনিধিদলের প্রধান বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া ঢাকায় নির্ধারিত কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে ওয়াশিংটনে ফিরে যাবেন। তবে ওই টিমের প্রভাবশালী সদস্য ডোনাল্ড লু দক্ষিণ এশিয়াতেই থাকছেন। তিনি বাংলাদেশ থেকে নেপাল যাবেন। সে কারণে তিনি বাড়তি কয়েক ঘণ্টা ঢাকায় অবস্থান করবেন। বহুল আলোচিত ওই মার্কিন কর্মকর্তা ওই সময়ে নিজের মতো করে বাংলাদেশে কাটাবেন বলে জানা গেছে। মার্কিন প্রতিনিধি দলের সফর বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন গতকাল সন্ধ্যায় মানবজমিনকে বলেন, মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারির সঙ্গে আলোচনায় নির্বাচন, মানবাধিকার পরিস্থিতি, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, রোহিঙ্গা সংকটসহ দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রায় সব নিয়েই খোলামেলা আলোচনা হবে। আমরা যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান জানার পাশাপাশি এ বিষয়গুলোতে বাংলাদেশের অবস্থানও তুলে ধরবো।  প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎসহ সিরিজ বৈঠক হবে: মে মাসে বাংলাদেশের জন্য স্বতন্ত্র ভিসা নীতির ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ১০ই ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে র‌্যাব এবং বিশেষায়িত ওই বাহিনীর সাবেক ও বর্তমান সামরিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল ওয়াশিংটন। ওই নিষেধাজ্ঞাকে ঘিরে দুই দেশের সম্পর্কে এক ধরনের অস্বস্তি তৈরি হয়েছিল। জানুয়ারির শুরুতে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু ঢাকায় এসে র‌্যাবের কর্মকাণ্ডে সন্তুষ্টির কথা জানালে বাংলাদেশ-ওয়াশিংটন সম্পর্কের অস্বস্তি অনেকটা দূর হয়েছিল।   চার মাস না যেতেই নতুন মার্কিন ভিসা নীতি সম্পর্কের পথে নতুন করে বাড়তি অস্বস্তি তৈরি করে। নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞার রেশ না কাটতেই নতুন মার্কিন ভিসা নীতি দেশ-বিদেশে কৌতূহল সৃষ্টি করেছে। এমন এক প্রেক্ষাপটে মার্কিন প্রতিনিধিদলের সফরটির বাড়তি তাৎপর্য রয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। চার দিনের এই সফরের তৃতীয় দিনে মার্কিন প্রতিনিধিদল বৃহস্পতিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।

  একই দিনে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে বৈঠক হবে। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে ডিনার এবং পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেয়ার কথা রয়েছে। কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, সফরকালে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও বৈঠক হবে মার্কিন প্রতিনিধিদলের।   সেই সঙ্গে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরও পরিদর্শনে যাবেন তারা। স্টেট ডিপার্টমেন্ট আগেই আগেই জানিয়েছে, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, মানবাধিকার ইস্যুসহ বিভিন্ন বিষয়ে দেশের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করতে বাংলাদেশ সফরে আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের সিভিলিয়ান সিকিউরিটি, ডেমোক্রেসি ও হিউম্যান রাইটস বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া। ৮ই জুলাই থেকে ভারত সফর এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশ সফর করবেন তারা। ঢাকায় থাকছেন ১৪ই জুলাই পর্যন্ত। ৭ই জুলাই প্রচারিত এ সংক্রান্ত এক বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে নাগরিক সমাজের সংগঠনের সঙ্গে মতপ্রকাশ ও সমাবেশের স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনায় লিপ্ত থাকবে প্রতিনিধিদলটি। তারা আলোচনা করবেন অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, রোহিঙ্গা সংকট, শ্রম ইস্যু, মানব পাচারসহ বিভিন্ন ইস্যুতে।