খবর প্রকাশিত: ২৮ এপ্রিল, ২০২৫, ০৫:৩২ পিএম
শিল্প এবং শিল্পীর সম্মান করতে বাঙালী আজ অক্ষম। আমরা যারা এই মুহূর্তে গান-বাজনা করি তাদের জন্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক সত্যি এটা। চূড়ান্ত বিশৃংখলা, সামগ্রিক অব্যবস্থা, পারিশ্রমিক নিয়ে দরাদরি – NABC তে এসব অভিজ্ঞতা আমার হয়েছে, কিন্তু এবার সহ্যসীমা পেরিয়ে গেছে বলে সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদ হচ্ছে, ভাগ্যিস!
কিন্তু এটা এখনকার বাঙালী সমাজের একটা বৃহত্তর ব্যাধির প্রকাশও। বিনামূল্যে গান গাওয়া, গান record ক’রে পাঠানোর অনুরোধ, বাজারের আলু-পটল কেনার মতো দর-দাম কষা, “তোমার তো টাকার দরকার নেই...” এই মন্তব্য – নিশ্চই আমি মহিলা, US এ থাকি অনেকটাই, আমার একটা বর আছে যে উপার্জন করে, সুতরাং সংসার চালানোর দায় তো আমার নেই, এসব ভেবেই বলা – ইত্যাদি সব শুনেছি। এমনকি সম্প্রতি US এর এক সংগঠক এর সঙ্গে অনুষ্ঠান পাকাপাকি হয়ে যাবার পর, আমাকে official আমন্ত্রণ পত্র পাঠানোর পর তিনি বেমালুম উধাও হয়ে যান। কিছুদিন পরে সামাজিক মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেখে বুঝলাম আমাকে বাদ দেওয়া হয়েছে সেই অনুষ্ঠান থেকে, আমাকে একটি কথাও না বলে।
বোধহয় সবচেয়ে দুঃখের বিষয় এই যে, এই ‘organizer’ প্রজাতির দাপট এবং অভব্য আচরণ বজায় থাকে কারণ আমরা আমাদের আত্মসম্মান বিসর্জন দিয়েছি। ‘সাম্মানিক’ কথাটার যথাযথ অর্থ সম্মান থেকেই আসে, আর তাই এই মূল্য টা চাওয়া এবং দেওয়া প্রয়োজনীয় শুধু নয়, অপরিহার্য। নিজেদের মধ্যে একে অপরকে ছোটো করা, নিজে ‘এগোনোর’ জন্য কাউকে নীচে নামানো, তার ক্ষতি করা, যা দেখে চলেছি, তার বিষময় ফল ভুগছি আমরা আজ।
আমাদের সঙ্ঘবদ্ধ হতেই হবে – শিল্পে, চিন্তায়, এবং সর্বোপরি মনুষ্যত্বে।