NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, সোমবার, জুন ১৬, ২০২৫ | ২ আষাঢ় ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
" ইসরায়েল আন্তর্জাতিক পারমাণবিক স্থাপনা আইন ভঙ্গ করেছে এবং শীর্ষ ইরানি বিজ্ঞানীদের হত্যা করেছে” ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের মধ্যে বৈঠক যুক্তরাষ্ট্রের ২০টি হলে শাকিব খানের ‘তান্ডব’র শুভ মুক্তি Iran Attack, a Foggy Peace and Truce Deal in Gaza - Dr Pamelia Riviere ফুলেল শুভেচ্ছায় অভিনন্দিত লায়ন শাহ নেওয়াজ পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাসহ ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরাইল ভারতীয় বিধ্বস্ত উড়োজাহাজে কারও জীবিত থাকার সম্ভাবনা নেই বিয়ানীবাজারবাসীদের উদ্যোগে সাংবাদিক ও লেখক মুস্তাফিজ  শফি সংবর্ধিত ট্রাম্পের নতুন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর, যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন উত্তেজনা চরমে বিক্ষোভে উত্তাল লস অ্যাঞ্জেলেসে ন্যাশনাল গার্ড বাহিনী, ডেমোক্র্যাটদের ক্ষোভ
Logo
logo

নিউইয়র্ক এ বসবাসরত যশোরের  বীর মুক্তিযোদ্ধা খুরশিদ আনোয়ার বাবলুর গল্প -- ড. সেলিনা আফরিন


খবর   প্রকাশিত:  ১৬ জুন, ২০২৫, ১১:৪৫ এএম

নিউইয়র্ক এ বসবাসরত যশোরের  বীর মুক্তিযোদ্ধা খুরশিদ আনোয়ার বাবলুর গল্প -- ড. সেলিনা আফরিন

গতকাল রাতে ডিনার খেতে  গেছিলাম আমেরিকার ফোবানার সাবেক চেয়ারম্যান জাকারিয়া চৌধুরীর সাথে,তিনি তখন বাংলাদেশের প্রবাসী বাঙালী আমেরিকার নিউইয়র্ক এ বসবাস রত যশোরের  বীর মুক্তিযোদ্ধা খুরশিদ আনোয়ার বাবলুর কথা বল্লেন। তখন আমার নিজেকে খুব গর্বিত মনে হচ্ছিলো যে,এই মহান মানুষটিকে আমি খুব কাছ থেকে  চিনি। যিনি যশোর জেলার কৃতি সন্তান, বীর মুক্তিযোদ্ধা, তিনি, একাধারে কবি,সাহিত্যিক,লেখক,কলামিস্ট, সাংবাদিক ও সমাজ সেবক। ১৯৭১ সালে যে ছেলেটি ক্লাস নাইনে পড়া ছাত্রাবস্থায় দেশকে শত্রু সেনার হাত থেকে বাঁচাতে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো,তিনি একজন যোদ্ধাহত
 কিশোর মুক্তিযোদ্ধা। শ্রদ্ধায় মাথা নতজানু এই সব বীর সেনাদের কাছে, যাদের আত্ন ত্যাগ ও  রক্তে কেনা হয়েছে, আজকের লাল সবুজের পতাকা ও স্বাধীন সোনার বাংলাদেশ। যাদের জন্য আমরা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পেরেছি,আমরা স্বাধীনতা ভোগ করছি,নির্দিষ্ট একটা স্বাধীন ভূখন্ড তাদেরই দান। বিনিময়ে তারা কি পেলো? এটা আমার প্রশ্ন? কিন্তু তারা কিছুই পায়নি। আসলে তারা দেশকে ভালবেসে স্বাধীনতা এনেছিলো,তাদের চাওয়া পাওয়ার কিছু না থাকলে ও তারা দেশের সর্বচ্চ সম্মান পাওয়ার দাবীদার। তারা ১৯৭১ সালে মৃত্যু নিশ্চিত জেনেই,প্রাণের মায়া ত্যাগনকরে দেশকে শত্রুর কবল থেকে রক্ষা করার জন্য মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো। ১৯৭১, পরবর্তী সময়ে, স্বাধীন বাংলাদেশে, এই মুক্তিযোদ্ধারা অবহেলিত হয়েচে। অথচ কতিপয় পাকিস্তানের দোসর, দালাল, রাজাকার,
দেশ বিরোধীরা নব্য স্বাধীন বাংলাদেশের সকল  সুযোগ ও সুবিধা নিয়েছে আজো ভোগ করে চলেছে। বাবলু ভায়ের অবদান বাংলাদেশ সহ আমার জন্মভুমি,আমার জেলা  যশোর অন্চলের কানায় কানায় ছড়িয়ে টিছিয়ে রয়েছে। এ যেন একটা হৃদয় স্পর্শকাতর, মানবীয়, মহৎপ্রাণ মানুষের একটা বিরল ইতিহাস,এই ইতিহাস বাংলাদেশে খুব কমই আছে।  ১৯৭১ সাল আমি দেখিনি,আমি যুদ্ধ পরবর্তী স্বাধীন বাংলাদেশে জন্ম নিয়েছি,লাল সবুজের পতাকা দেখেছি। কিন্তু ইতিহাস জেনেছি। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের খান সেনারা এই বাবলু নামের কিশোরকে, তিন তলার সিঁড়ি থেকে লাত্থি মেরে নীচে ফেলে দিয়েছিলো, তার শরীরে বেনোয়েড চার্জ করে তাকে রক্তাক্ত করে সামনের সারির প্রায় সকল দাঁতই ভেঙ্গে ফেলেছিলো।সকল মৃত লাশের সাথে বাবলু ভাইকে মৃত ভেবে, গর্ত করে, সারি সারি মৃত লাশের স্তুুপের মাঝে বাবলু ভাইকে ও ফেলে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলো,অচেতন বাবলু ভায়ের তখন ওপরওয়ালার ইশারায় আগুনের তাপে জ্ঞান ফিরে এসেছিলো।

কিন্ত তখন তিনি অক্ষম, হাত পা ভাঙ্গা, হাড়গোড় ভাঙ্গা দাঁত ভাঙ্গা,শরীরে জোর নাই,পেটে ক্ষিধে,গা থেকে ঝরঝর করে রক্ত ঝড়ছে,কিন্তু তিনি হেরে যাবার জন্য জন্ম মেন নাই। তিনি তখন লাশের ভেতর থেকে কোনমতে বেরহয়ে, বুকে হামা গুড়ি দিয়ে,ড্রেনের কাদামাটি,সাপ কোপ,পোকামাকড় ভেদ করে পালাতে সক্ষম হন। তারই চোখের সামনে তার পরিবারের ২৪ জনকে পাকিস্তানের হায়েনারা খুন করেছিলো, বাড়ীতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিলো,কিন্তু বীর মুক্তিযোদ্ধা বাবলু ভাই, মৃত সমান কষ্ট বুকে নিয়ে  দেশের  স্বাধীনতাকে ছিঁনিয়ে এনেছিলো।

আমরা বাবলু ভায়ের কাছে ঋনী,এরকম বাবলু ভায়ের মতো অসংখ্য বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে ঋনী।আমার বাবাও একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, আমি আমার বাবার কাছে ও চির ঋনে আবদ্ধ। এই সব বীর বাঙালী কঠিন চিত্তে,বজ্রাহত হয়ে হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছিলো বলেই আজকের স্বাধীনতা, আজকের বাংলাদেশ,আজকের লাল সবুজের পতাকা পেয়েছি।এই মানুষগুলো আছে বলেই না আমরা বাঙালী।এই জাতির পরিচয়,এই সংস্কৃতি,এই ইতিহাস, সকল কিছুর সাক্ষী বহন করে চলেছে বাংলাদেশের  স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নায়কেরা। বাবলু ভাই একজন রিয়েল হিরো। সম্মান,শ্রদ্ধা, ভালবাসা নতজানু আমরা এই মানুষটির কাছে।গর্বিত যশোরবাসীর গর্বিত সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা খুরশিদ আনোয়ার বাবলুকে স্যালুট।