সালাহউদ্দিন আহমেদ প্রকাশিত: ২৯ এপ্রিল, ২০২৫, ১২:০৯ এএম
নিউইয়র্ক (ইউএনএ): জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকার
রোববারের (১১ জুন রোববার) সাধারণ সভা ঘিরে প্রবাসী
জালালাবাদবাসীদের মাঝে নানা গুঞ্জন চলছে। গুঞ্জণ চলছে নিউইয়র্কের
অন্যতম বৃহত্তম পুরনো এই সংগঠন ভাঙানের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে।
¯’ায়ীভাবে বহিষ্কার হতে পারেন কার্যকরী কমিটির সভায় বহিষ্কৃত
সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম। এদিকে মইনুল ইসলাম নিজেকে
সাধারণ সম্পাদক দাবী করে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন- সংগঠনের
কোন কর্মকর্তা ও সদস্যকে বহিষ্কার করতে হলে কার্যকরী কমিটি নয়,
সাধারণ সভায় সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তিনি বলেছেন, কতিপয় ব্যক্তির
ইগো সমস্যায় জালালাবাদ ভবন সমস্যার সামাধান হচ্ছেনা। উল্লেখ্য,
আগামী রোববার সন্ধ্যা ৬টায় সিটির উডসাইড কুইন্স প্যালেসে
এসোসিয়েশন সাধারণ সভা আহবান করা হয়েছে। এই সাধারণ সভার
বিষয়ে সভাপতি বদরুল হোসেন খানের সাথে সাধারণ সম্পাদক মইনুল
ইসলাম ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রোকন হাকিম-এর নামে বিভিন্ন
সাপ্তহিকীতে বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়েছে।
এষ্টোরিয়ার জালালাবাদ ভবনে মইনুল ইসলাম গত ২ জুন শুক্রবার রাতে এক
সংবাদ সম্মেলেনের আয়োজন করেন। সংবাদ সম্মেনে জালালাবাদ
এসোসিয়েশনের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়। এসময় মইনুল
ইসলাম ছাড়াও এসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর
রহমান শেফাজ ছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে জালালাবাদ এসোসিয়েশেনের
সাবেক কর্মকর্তা আতাউল গণি আসাদ, হালিম উদ্দিন উদ্দিন ও শাহীন
কামালীও বক্তব্য রাখেন এবং উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের
উত্তর দেন।
সংবাদ সম্মেলনে মিজানুর রহমান শেফাজ বলেন, জালালাবাদ
এসোসিয়েশানের ভবন সংμান্ত সকল সিদ্ধান্ত সদ্য সাবেক সভাপতি
মইনুল হক চৌধুরী হেলাল ও মিজানুর রহমান শেফাজ কমিটি কর্তৃক
সংগঠনের পূর্ববর্তী সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত ও সংগঠনের গঠনতন্ত্র
মোতাবেক গ্রহণ করা হয়েছে। এতে সাবেক কোষাধ্যক্ষ মইনুল
ইসলামসহ কোন একক ব্যক্তির কোন ভুমিকা ছিলনা। তিনি উপস্থিত
সাংবািদকদের এই মর্মে সংশ্লিষ্ট সকল নথিপত্রের অনুলিপিও হস্তান্তর
করেন। তিনি আরো বলেন, বর্তমান কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের
সময় ভবন μয় বাবদ ব্যয়কৃত অর্থের হিসাবও প্রদান করা হয় যাতে
সাবেক সভাপতি মইনুল হক চৌধুরী হেলাল ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক
মিজানুর রহমান শেফাজ দায়িত্বগ্রহণকারী সভাপতি বদরুল হোসেন
খান ও সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলামের স্বাক্ষর রয়েছে। তিনি বলেন,
কোথাও লুকোচুরির কিছু নেই, সব কিছুই ডকুমেন্টেড রয়েছে।
সাবেক কোষাধ্যক্ষ ও পরবর্তীতে নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক মইনুল
ইসলাম বলেন, জালালাবাদ ভবন প্রতিষ্ঠা ছিল তাঁর নির্বাচনের
প্রতিশ্রæতি যা বাস্তবায়নে সদ্য সাবেক কমিটির সহযোগিতা
ছিল সর্বসম্মত। একটি নন প্রফিট সংগঠনের পক্ষে মর্টগেজ পাওয়া
খুব কঠিন বিধায় আলাদা আরেকটি কর্পোরেশন করে ভবনটি ক্রয় করা
হয়েছে এবং সেখানেও অস্বচছতার কিছু নেই, কারণ প্রয়োজনে
ভবনটি জালালাবাদ এসাসিয়েশানের কাছে হস্তান্তর জটিল কোন কাজ
নয় বলেও তিনি জানান।
সংকট নিরসনে সাবেক ৬ সাধারণ সম্পাদকের সাথে সহযোগিতা না
করার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তারা সাসপেনশন প্রত্যাহারের ব্যাপারে যে
প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা রক্ষা করতে পারেনি বলে তিনিও তাদের
ভুমিকাকে কার্যকর বলে মনে করেন নি।
মইনুল ইসলাম আরো বলেন জালালাবাদ ভবন নিয়ে অব্যাহত অপপ্রচার
চালানো হচ্ছে। ভবনটি প্রায় ৯ লক্ষ ডলার মুল্যে ক্রয় করা হলেও বর্তমানে
ভবনটির বাজার মূল্য রয়েছে প্রায় ১.৩ মিলিয়ন ডলার। ভবন ক্রয়কে কেন্দ্র
করে বর্তমান কার্যকরী কমিটি তাকে সাসপেন্ড করার বিষয়ে মইনুল
ইসলাম বলেন জালালাবাদ এসোসিয়েশানের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সভাপতি
ও সাধারণ সম্পাদক এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করতে হলে সাধারণ সভার
সিদ্ধান্ত হতে হবে, কার্যকরী কমিটির নয়। তিনি আগামী ১১ জুন
রোববার অনুষ্ঠিতব্য সাধারণ সভায় সকল জালালাবাদবাসীর জন্য উন্মুক্ত
করার দাবী জানিয়ে বলেন, জালালাবাদ এসোসিয়েশান সকল
জালালাবাদবাসীর, তাই সেই সংগঠনের সাধারণ সভা কেন নিয়ন্ত্রিত
হবে?
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে সদ্য বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান
চৌধুরী শেফাজ লিখিত বক্তব্যে বলেন, প্রবাসের অন্যতম আঞ্চলিক এবং
বৃহত্তর সিলেটবাসীর প্রাণের সংগঠন জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব
আমেরিকা ইনকের ভবন ক্রয় নিয়ে সংকট চলছে। জালালাবাদ
এসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে ভবন μয়ের
উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। কিন্ত কখনো আমারা সফল হতে পারিনি। বিগত
কার্যকরিী পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গৃহীত রেজ্যুলেশন মোতাবেক
এবং সেই সাথে ট্রাস্টি বোর্ডের মতামতের ভিত্তিতে বর্তমান ভবনটি
ক্রয় করতে সম্মত হই।
তিনি বলেন, জালালাবাদ এসোসিয়েশন একটি নন-প্রফিট সংগঠন।
সবাই জানেন নন-প্রফিট সংগঠনের নামে কোন লোন নেয়া যায় না।
আমাদের সকলের অনুরোধে গত কার্যকরি পরিষদের কোষাধ্যক্ষ ও বর্তমান
কার্যকরী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম তার নামে বাড়ির লোন
করতে সম্মত হন এবং আমরা ভবনটি ক্রয় করতে সক্ষম হই। আমাদের
কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার শেষ পর্যায়ে আমরা বাড়িটি ক্রয় করি।
পরবর্তীতে নির্বাচিত কার্যকরি কমিটিকে দায়িত্ব হস্তান্তরের
সময়μয়কৃত ভবনের সম্পূর্ণ নথিপত্র, হিসাব সঠিকভাবে বুঝিয়ে দেয়া
হয়। সেই হিসাবে বর্তমান সভাপতি বদরুল হোসেন খান স্বাক্ষর
করেছেন। আমাদেরও স্বাক্ষর রয়েছে। এই ভবনটি সম্পূর্ণ নিয়ম অনুযায়ী
ক্রয় করা হয়েছে।
মিজানুর রহমান চৌধুরী শেফাজ বলেন, জ্যাকসন হাইটসে জালালাবাদের
ভবনের জন্য বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সভাপতি এবং ট্রাস্টি
বোর্ডের চেয়ারম্যান এম আজিজকে কার্যকরি কমিটির সভাপতি
ময়নুল হক চৌধুরী হেলাল এবং কার্যকরি কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক
২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর আমাদের একাউন্ট থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার
ডলার ট্রান্সফার করি। সেই ভবন নিয়ে সমস্যা হলে তিনি তিন দিনের
মাথায় ২০২১ সালে ১ জানুয়ারী এক চেকে সেই অর্থ আমাদের ফেরত
দেন। এ নিয়েও বিভ্রান্তির সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, এখন
সভাপতি ও বর্তমান কার্যকরি কমিটির কোন কোন সদস্য এই ভবন ক্রয়
নিয়ে অসত্য তথ্য ও বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য দিয়ে এই জটিল অবস্থার সৃষ্টি
করেন। জালালাবাদ এসোসিয়েশনের বিদায়ী কার্যকরি কমিটিরপক্ষ
থেকে আমি সাধারণ সম্পাদক হিসাবে সম্মানিত জালালাবাদবাসীকে
আশ্বস্ত করতে চাই ভবনটি সঠিক নিয়মেই ক্রয় হয়েছে। জালালাবাদবাসীর
কাছে আমার অনুরোধ আপনারা মিথ্যা তথ্য ও বিভ্রান্তমূলক বক্তব্যে
বিভ্রান্ত না হয়ে জালালাবাদবাসীদের স্বপ্নের ভবনটি রক্ষা করুন,
আপনাদের স্বপ্ন পূরণে সহযোগিতা করুণ এবং প্রিয় সংগঠনকে
এগিয়ে নিতে হাত বাড়িয়ে দিন।