দেলওয়ার হোসেন প্রকাশিত: ২৭ এপ্রিল, ২০২৫, ০২:৩৭ পিএম
দেলওয়ার হোসেন, সুইডেন থেকে
মুসলিম বিশ্বে উদযাপিত হয়ে গেল কোরবানির ঈদ । শিরোনামের বিষয়টি নিয়ে লেখার ইচ্ছা ছিল বহু আগে । । তা হয়ে ওঠেনি । বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষের দুর্নিবার কৌতুহলের যে বিষয়টি প্রায়ই নানান প্রশ্ন ও অ্নুসন্ধিতসার সম্মুখীন হই ভাবলাম - তা নিয়েই আজকের লেখাটা হোক। বন্ধু-বান্ধব, স্বজন, পরিচিত জনদের প্রবাসীদের কাছে কৌতুহলের কোন অন্ত নেই । তার মধ্যে ধর্মীয় বিষয়টা অন্যতম প্রধাণ । যেমন যে প্রশ্নগুলোর চর্চা চলে আসছে অন্তহীনভাবে - তোমার ওই দেশে কি মুসলমান নাই, মসজিদ নাই । তোমরা ওখানে কীভাবে ধর্ম – কর্ম করো ওরা কি সবাই বিধর্মী কাফের । ওই কাফেরের দেশে আর কতদিন থাকবা । ওরা নাকি শুয়োরের মাংস খায় । ওখানে কি তোমরা হালাল খাবার পাও … এবং এমনতরো প্রশ্নের শেষ নেই । তাই চটজলদি লেখার বিষয় বস্তু নির্ধারণ করলাম এ বিষয়ে এই মোক্ষম সময়টাতে কিছু তথ্য শেয়ার করা যেতে পারে ঐ সমস্ত কৌতুহলী পাঠকদের জন্য । তাই তুলে ধরা যাক সুইডেনে ইসলাম ধর্মাবস্থানের চালচিত্র …উত্তর ইউরোপের খৃস্টান অধ্যুষিত দেশ সুইডেনের সাথে মুসলিম দেশগুলোর সংযোগ ঘটে সপ্তম শতাব্দী থেকে দশম শতাব্দী পর্যন্ত ভাইকিংদের আরবি মুসলিম দেশগুলের মধ্যে বাণিজ্যের সূত্র ধরে । এরপর শতাব্দী পেরিয়ে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সুনিয়ন্ত্রিত রাজতন্ত্রের রাজত্বকালে কৌশলে শাসন কাজ পরিচালনার দিকে মনোযোগ দিতে হয় দেশটিকে ।
সেই লক্ষ্যে নিজ দেশের নিরাপত্তার প্রশ্নে ওসমানিয়া সাম্রাজ্যের শক্তিধর শাসকের সাথে মিত্রতার সম্পর্ক গড়ে তুলতে সুইডেনের রাজা তৃতীয় কার্ল গুস্তাভ ১৭০৯ সাল থেকে ১৭১৪ সাল পর্যন্ত অবস্থান করেন তুরস্কে । সেখানে তিনি রাজা তৃতীয় সুলতান আহমেদকে বোঝাতে সক্ষম হন যে, তাদের উভয় দেশের মাথার ওপর দুশ্চিন্তা ও মহা উদ্বেগের কারণ হয়ে বসে আছে শত্রু দেশ আগ্রাসক রাশিয়া । উভয়ে বিষয়টির বাস্তবতা উপলব্ধি করে মিত্রতার বন্ধনে আবদ্ধ হন । এই সুযোগে কার্ল গুস্তাভ তুরস্কের মুসলিম ধর্ম , মুসলিম সংস্কৃতি , আচার- ঐতিহ্য , ভাষা , সঙ্গীত , স্থাপত্য , নির্মাণ ও স্থাপত্য কলা , চিত্রশিল্প, এবং চিকিৎসা শাস্ত্র সহ প্রভৃতি বিষয়ের ওপর জ্ঞান আহরণের জন্য জ্ঞানীজন, বুদ্ধিজীবি ও সমাজ বিজ্ঞান গবেষকদের তুরস্কে অধ্যায়ন ও গবেষণার ব্যবস্থা করেন ,
স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের সময় একটি বিরাট ও চৌকস তুর্কী সৈন্যদলের লাটবহর রাজাকে এসকোর্ট করে নিয়ে আসেন সুইডেনে । শেষাবধি তারা তুরস্কে ফিরে না গিয়ে স্থায়ী ভাবে থেকে যান সুইডেনের মাটিতে । রাজা এই সম্মানিত অতিথিদের প্রতি সম্মান দেখিয়ে স্বাধীনভাবে তাদের ধর্ম – কর্ম ও নিজেদের আচার – ঐতিহ্য স্বাধীন ভাবে পালনের অধিকার দেন । তারা ভিন দেশে ঐক্যের বন্ধনে আবদ্ধ থাকার জন্য নিজেরা মিলে গড়ে তোলেন একটি ইসলামিক এসোসিয়েসন । এখান থেকেই সুইডেনে ধর্ম , বর্ণ , জাতি-গোষ্ঠী নির্বিশেষে বিনা বাঁধায় শান্তিপূর্ণ ভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালনের স্বাধীনতা লাভের অধিকারটি স্বীকৃত হয় এবং ধীরে ধীরে তা আরো শক্তিশালী ও পূর্ণ মানবাধিকারের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত হয় ।
এরপর ১৮৯৭ সালে প্রথম অভিবাসী হিসেবে সুইডেনের মাটিতে পদার্পণ করেন , রাশিয়া থেকে আগত তাতার জাতি গোষ্ঠীর এক মুসলিম ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এব্রাহিম উমেরকাজিফ ( ১৮৭৭- ১৯৫৪ ) তিনি স্টকহোল্মে ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরুর মধ্য দিয়ে সাফল্যের শীর্ষে পৌছেন খুব দ্রুত এবং অল্প সময়ের মধ্যে । ব্যবসা পারিবারিক সাম্রাজ্যে রূপ নেবার পর তিনি রাজধানী স্টকহোল্মের সবচেয়ে মূল্যবান এলাকা ওস্টারমাল্মতোরিতে বহু দোকান-পাট , বাণিজ্যিক ও আবাসিক ভবনের মালিক হন । অঢেল অর্থ – বিত্ত , বৈভবের প্রাচুর্যে তিনি পরিণত হয়েছিলেন সম্পদশালী এক মুকুটহীন রাজার সমকক্ষ ।এরপর তুরস্ক থেকে দ্বিতীয় আগন্তক আকিফ আরহান এসে পা রাখেন ১৯২০ সালে । তার বছর বিশেক পর চল্লিশের দশকে একদল তাতার শিয়া-সুন্নী আসেন সোভিয়েত ইউনিয়ন ও ফিনল্যান্ড থেকে । একই সময় তুরস্ক থেকে আসেন ওসমান সুকান ( ১৯০৩ – ১৯৭৫ ) তিনিই মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রথম ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ।
তারপর ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য চর্চা ও রক্ষার জন্য উমের কাজিফ, আরহান , সুকান ও আলী জাকেরভ মিলে স্টকহোল্মে প্রতিষ্ঠা করেন প্রথম তুর্ক – ইসলাম নামের মুসলিম সংঘ । এরপর নাম বদল করে রাখা হয় ইসলামি এ্যাসোসিয়েশন অফ সুইডেন । এরপর প্রতিষ্ঠিত হয় ইহুদী সংগঠণ । ১৯৫০ সালে স্টকহোল্মের স্কুগস সিরকো গোর্ডেন এলাকায় কেনা হয় মুসলিম কবরস্থান । ১৯৭৩ সালে মূল সংগঠণটি কেন্দ্রীয় ইসলামী সংগঠ্ণ হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর অন্যান্য সকল ক্ষুদ্র ইসলামিক সংগঠণ গুলোকে এর ছায়া তলে নেয়ার পর ১৯৭৫ সাল থেকে মোটা অংকের রাষ্ট্রীয় আর্থিক সুবিধা লাভ করতে থাকে । ধর্ম বান্ধব পরিবেশ অবারিত হওয়ায় সুইডেনের বন্দর নগরী গোথেনবারগে প্রথম মসজিদটি স্থাপিত হয় ১৯৭৬ সালে । এর নাম নাসির মসজিদ । তারপর মালমো শহরে বৃহত্তম মসজিদটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৮৩ সালে । নির্মাণে অর্থায়ন করা হয় মধ্যপ্রাচ্যের ধনী দেশগুলো থেকে ।
শুধু তাই নয় , তাঁরও বহু আগে এক সুইডিশের ইসলাম ধর্মান্তরিত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে ১৮৯৮ সালে । তার নাম ইভান আকেলি । তিনি ১৮৯২ সাল থেকে ১৯১৬ সাল পর্যন্ত বাস করেন মিশরে । সেখানে তিনি আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেন । সুইডেনে প্রথম সুইডিশ ভাষায় কোরানের পূরণাঙ্গ অনুবাদ করেন ইউহান ফ্রেডরিক সেবাস্টিয়ান ক্রুসেনস্টোলপে নামের একজন সুইডিশ । প্রকাশিত হয় ১৮৪৩ সালে । এরপর ১৯১৭ সালে আবার সুইডিশে অনুবাদ করেন অপর সুইডিশ কার্ল ভিলহেল্ম সেত্তারস্টিনস এবং উনিশ শতকের শেষ সময় পর্যন্ত ছিল এই অনুবাদটিই সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য বলে বিবেচিত ।
সুইডেনে আরেক দল ভারতীয় বংশোদ্ভূত শিয়া মুসলিমের আগমন ঘটে উগান্ডা থেকে ১৯৭৩ সালে ক্ষ্যাপাটে শাসক ইদি আমিনের শাসনামলে। এরা স্থায়ী আবাস গেড়ে বসে স্টকহোল্মের অদুরে ট্রোলহ্যাটান শহরে । তারা ১৯৭৬ সালে গঠণ করেন এক বৃহৎ শিয়া-মুসলিম সংঘ এবং ১৯৮৫ সালে উপসালা শহরে নির্মাণ করেন একটি বিশাল মসজিদ । ২০০০ সালে রাজধানী স্টকহোল্মের কেন্দ্রস্থল মেদবোরিয়ারপ্লাতসেন এ তুরস্ক, সৌদি আরব, ইরান, ইরাক, কাতার ও সংযুক্ত আরব-আমিরাতের দেয়া অর্থে নির্মিত হয় ১১০০ বর্গ মিটার আয়তনের একটি বিশাল জামে মসজিদ । নারী-পুরুষ উভয়েই এখানে একযোগে আলাদাভাবে নামাজ আদায় করেন । এখানে হয় বিপুল মুসল্লীর সমাগম । তুর্কী অভিবাসীদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এর পরেরটি নির্মিত শহরের উপকন্ঠে ফিতিয়া এলাকায় ২০০৭ সালে ।
তবে ১৯৩০ সালের পর থেকে মুসলিম অভিবাসীর আগমন লক্ষ্যনীয়ভাবে শুরু হলেও বিশ্ব যুদ্ধের পর ১৯৪১ সালের পর কর্মসংস্থান ও সুইডেনে জনশক্তির প্রয়োজনে অভিবাসনের যে ঢল নামে , তার মধ্যে অনেক মুসলিম অভিবাসীও সামিল হয় । এই স্রোত চলে ১৯৭০ সালের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত । এরপর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, লেবানন, আফগানিস্তান, ইথিওপিয়া-ইরিত্রিয়া, ইরান-ইরাক, কুয়ে্ত, কসোভো, বসনিয়া, , লিবিয়া ও সিরিয়ার যুদ্ধের ফলে সুইডেনে মুসলিম অভিবাসীর আগমন বিস্ফোরণের মত রূপ নেয় । বর্তমানে সুইডেনে মুসলিম অভিবাসীর মধ্যে সর্বাধিক সংখ্যায় রয়েছে সিরিয়ান ( প্রায় দুই লাখ) , তার পরের স্থানে রয়েছে , ইরান, সোমালিয়া, আফগানিস্তান, আফগানিস্তান, বসনিয়া – হার্জেগোভিনা, তুরস্ক, ইথিওপিয়া –ইরিত্রিয়া । পাকিস্তানের রয়েছে প্রায় চৌদ্দ হাজার । বাংলাদেশের ১৩ হাজারের ওপর । তবে এই সংখ্যার মধ্যে মুসলিমরাই সংখ্যায় ভারী । তাই অন্যান্য দেশের অভিবাসী জনগোষ্ঠীর সংখ্যা উল্লেখ করা হলো না ।
মোট সাড়ে চার লক্ষ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের দেশ সুইডেনের জনসংখ্যা এক কোটি , যার প্রতি বর্গ কিলোমিটারে বসবাসের সংখ্যা ২৫.৭ জন । বিশ্বের কম বেশি ২০০টি দেশ থেকে সুইডেনে আসা অভিবাসীর সংখ্যা ২০ লাখের ওপর। ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত গণনা করা পরিসংখ্যান অনুযায়ী এ সংখ্যা কুড়ি লক্ষ ৯০ হাজার ৫০৩ জন । সেই হিসাবে এরা সুইডেনের মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশের কিছুটা বেশি । নারী এবং পুরুষের সংখ্যা প্রায় সমান । ২০১৭ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী মুসলিমের সংখ্যা ৮ লক্ষ ১০ হাজার । শতাংশের হিসাবে দাঁড়ায় ৮,১ ভাগ । স্বাধীনভাবে ইসলাম ধর্ম – কর্ম পালন, শিক্ষা গ্রহণের জন্য ইসলামিক বা কোরান স্কুল, ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার জন্য বিশেষ ব্যবস্থাপনার আয়োজন, বন্দোবস্ত, মিলনায়তন সহ যা যা প্রয়োজন তার কোনটারই কমতি নেই ।
যেখানেই মোটামুটি সংখ্যায় মুসলিমের বসবাস সেখানেই আবাসিক বা বাণিজ্যিক এলাকার ভবনগুলোর তলদেশের বেসমেন্টগুলোতে মুসল্লীদের নামাজ আদায় এবং অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠান হয়ে আসছে । ঈদের নামাজের ব্যবস্থাও এখানেই হয় । অথবা বড় জামাতের জন্য কোন ভবনের বড় হল ভাড়া নিয়ে তা করা হয় । এমন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মসজিদ ছাড়াও সুইডেনের মোট ২৮৮টি কমিউনের ( স্থানীয় সরকার – পৌরসভা + তার বাইরে রয়েছে ২৪টি জেলা পরিষদ ) মধ্যে ১৭টি কমিউনে নিজস্ব স্থাপনা নিয়ে নির্মিত হয়েছে ৪০টি মসজিদ ( জার্মানিতে রয়েছে ২৭৫০টি মসজিদ ) । তার মধ্যে মুসলিমদের দীর্ঘদিনের দাবি অনুযায়ী সুইডেনের ফিতিয়া, ভ্যাক্সিও , কার্লসক্রোনা সহ ৫টি মসজিদ থেকে কেবল জুমার নামাজের জন্য এক বেলা আযান প্রচারের অনুমতি দেয়া হয়েছে ।
সুইডেনের মাটিতে ফিতিয়া মসজিদ থেকে প্রথম আজান প্রচার করা হয় ২৬ এপ্রিল , ২০১৩ তারিখ শুক্রবার বেলা ১২টা ৫৭ মিনিটে। এ আজান দেন মসজিদের তুর্কী ইমাম এরজিন ওকজেম । অপরদিকে ভ্যাক্সিও মসজিদে প্রথম আজানপ্রচার করা হয় ২০১৮ সালের ২৫ মে, শুক্রবার । বহু বিতর্কের পথ পাড়ি দিয়েই এই দাবি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে। বিতর্ক ছিল কর্মস্থলে হিজাব পরিধান ও নামাজ আদায়ের জোরালো দাবি নিয়ে । শেষতক তাও মেনে নেয়া হয়েছে । যেমন কর্মস্থলে শিখদের মাথায় টারবান পরা নিয়ে যে তুমুল বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল, শেষমেশ তার ইতিবাচক ফয়সালা হয় আদালতে । এরপর যুক্ত হয়েছে নতুন দাবি - তুমুল বিতর্ক ও জোরালো দাবি চলছে – ঈদের ছুটি নিয়ে । ঈদ উপলক্ষে কোন সরকারি ছুটি নেই । ঐচ্ছিক ছুটি গ্রহণ একমাত্র উপায় । সিক মারলেই একদিনের বেতন কাটা ।
ত বিতর্ক ছিল হালাল মাংসের যোগান ও পশু জবাইয়ের অনুমতি নিয়ে । শেষতক সে দাবিও মানা হয়েছে । তবে কোনভাবেই প্রকাশ্যে জবাই নয় । নির্ধারিত কসাইখানার বাইরে জবাই এর সুযোগ নেই । কিন্তু এর বাইরেও নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে দুরের কোন বিচ্ছিন্ন এলাকায় পশুর খামারে গিয়ে খামারিকে ধর্মীয় ঐতিহ্যের মানবিক দোহাই দিয়ে সহানুভুতি আদায়ের মাধ্যমে পশু জবাই করে আনা মাংস বিক্রী করেন এক শ্রেনীর ধর্মানুরাগী মুসল্লী ব্যবসায়ীরা ।
কোরবানির ঈদে যারা দেশের মত এদেশে কোরবানি দেয়ার মানত করেন , তারাই এদের হাতে দায়িত্ব দেন পশু কোরবানির। ধর্মের নামে এই মুসল্লী ব্যবসায়ীরা সেবা দিয়ে কোরবানি দাতাদের কৃতার্থ করেন । এবারের কোরবানির ঈদে এক ব্যবসায়ী মোবাইলে ম্যাসেজ দিয়ে জানালেন – যারা কোরবানি দিতে ইচ্ছুক তাদের প্রতি ভাগের কোরবানির মূল্য দাঁড়াবে ( ৩১০ কেজি ওজনের গরু) ৪২০০ ক্রোনার । বাংলাদেশী টাকায় যার অংক দাঁড়ায় কম বা বেশী চল্লিশ হাজার টাকা । এবং ১০-২০ কেজি ওজনের একটি ভেড়ার মূল্য পড়বে ৩২০০ ক্রোনার । কম বেশি ত্রিশ হাজার টাকা ।দেশের মানুষ বা স্বজনদের কাছ থেকে এ কথাটিই বেশি শুনতে হয় – তোমরা কোথায় ( মাঠে) নামাজ পড়লা । কয়দিন ছুটি । কী কোরবানি দিলা । তোমাদের ওখানে কি পশুর হাট বসে , ঐটা কি বিধর্মীর দেশ, তাহলে ঐ দেশে পড়ে আছো কেন ? ইত্যাদি, ইত্যাদি !
স্টকহোল্ম, ১০ জুলাই, ২০২২ ( লেখক সুইডেন প্রবাসী সাংবাদিক )