মশিউর আনন্দ প্রকাশিত: ২৭ এপ্রিল, ২০২৫, ০২:০৪ পিএম
স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে সবচেয়ে উজ্জ্বল শিল্পমাধ্যম থিয়েটার। স্বাধীনতার মহান আদর্শে আপসহীন। বিষয়বৈচিত্রে, রচনাশৈলী ও নাট্যনির্মাণে শেকড়ের সন্ধানী থিয়েটার বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিচ্ছে নিজস্ব জ্যোতি।
রুমা মোদক রচিত সাম্প্রতিক নাট্যসাহিত্যের ৭টি উল্লেখযোগ্য রচনা রয়েছে নির্বাচিত নাটকের এই সংকলনে। এছাড়াও তার সৃজনশীলতায় রচিত ও মঞ্চস্থ নাটক সমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য 'বিভাজন'( জীবন সংকেত হবিগঞ্জ কর্তৃক মঞ্চস্থ ); “বাঁশি ও বিষের গল্প”(জেলা শিল্পকলা একাডেমি কর্তৃক মঞ্চস্থ
'কমলাবতীর পালা'(জীবন সংকেত হবিগঞ্জ কর্তৃক মঞ্চস্থ ); 'ন বৃত্তীয়'( জীবন সংকেত, হবিগঞ্জ কর্তৃক মঞ্চস্থ; 'যুদ্ধ এবং জয়ীতারা'(হবিগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমি কর্তৃক মঞ্চস্থ ; 'যুদ্ধগাঁথা ৭১'(মুন্সিগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমি কর্তৃক মঞ্চস্থ ) ও 'ফিয়ারলেস' (ঢাকা থিয়েটার কতৃক মঞ্চস্থ)
রুমা মোদক জন্ম ১৯৭০ সনে। একজন কথাসাহিত্যিক, থিয়েটার কর্মী এবং নাট্যকার হিসেবে নিজেকে আত্মপ্রকাশ করেন। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ১০ টি। তারমধ্যে ১ টি কাব্যগ্রন্থ, ৬ টি ছোটগল্প সংকলন, ২ টি নাট্যসংকলন ও ১ টি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস গ্রন্থ। তিনি একজন নিবেদিতপ্রাণ থিয়েটার কর্মী ও নাট্যকার। তাঁর রচিত মঞ্চায়িত নাটকের সংখ্যা প্রায় ২০ টি। প্রথম নাটক 'কমলাবতীর পালা' ১৯৯৯ সালে মঞ্চস্থ হয়।বাংলাদেশের কথা সাহিত্য ও নাটকের এক ভিন্ন স্বর তিনি। ধর্ম ও জীবনের মিথষ্ক্রিয়ায় বাংলাদেশের মানুষের জীবনে যে অমোঘ বিপন্নতা আমরা দেখি সেই ছবিটি তার সাহিত্যে আঁকতে চান।
নিজের থিয়েটারকর্মী পরিচয়েই স্বচ্ছন্দ তিনি। ইচ্ছাকৃতভাবেই তিনি নাটক লিখেন শুধুই মঞ্চের জন্য, আর কোন মাধ্যমে নয়। নির্দ্বিধায় স্বীকার করেন থিয়েটার করার প্রয়োজনে নাটক লিখেন, নাট্যকার পরিচয়ের জন্য নয়।
১৯৯৯ সনে মঞ্চে আসে তাঁর প্রথম নাটক 'কমলাবতীর পালা'। ২৪ বছরের থিয়েটার ভ্রমণে বিভাজন, জ্যোতিসংহিতা, ফেয়ারলেস, যুদ্ধগাথা' ৭১ সহ তাঁর লেখা ও মঞ্চায়িত নাটকের সংখ্যা ২০টি, স্ত্রীর পত্র, মতিলাল পাদ্রী, সাত কইন্যার কাহন সহ একাধিক রূপান্তরিত নাটকও রয়েছে এ তালিকায়। একাধিক নাটকের নির্দেশনাও দিয়েছেন। তাঁর ভাষ্যে— অভিনয়ের জন্য মঞ্চে দাঁড়ান তিনি থিয়েটারের প্রয়োজনেই।
মঞ্চ নাটকে অবদানের জন্য পেয়েছেন তনুশ্রী পদক ২০১৪, জাকারিয়া স্মৃতি পদক ২০১৭ ফওজিয়া ইয়াসমিন স্মৃতি পদক ২০১৯, মণিপুরী থিয়েটার সম্মাননা ২০১৯, ব্যতিক্রমী থিয়েটার সম্মাননা ২০১৮, দিক থিয়েটার সম্মাননা ২০১৭,মমতাজউদ্দিন আহমেদ নাট্যকার পুরস্কার ২০২৩,নান্দিক (চট্টগ্রাম) সম্মাননা ২০২২ সহ একাধিক পদক ও সম্মাননা।
যায় যায় দিন প্রতিদিনে সাব ইডিটর হিসেবে কর্মজীবনের শুরু। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে এম.এ ডিগ্রি অর্জনের পর কর্মরত আছেন শিক্ষকতা পেশায়।নাট্যকার পরিচয়ের চেয়ে থিয়েটার কর্মী হিসেবে পরিচয় দিতেই বেশি স্বাচ্ছন্দবোধ করেন।