নিউইয়র্ক (ইউএনএ): আমেরিকান মূলধারার রাজনীতির সাথে
বাংলাদেশী কমিউনিটি তথা সাউথ এশিয়ান কমিউনিটির আরো
যোগাযোগ বৃদ্ধির প্রত্যয়ে অনুষ্ঠিত হলো অ্যালায়েন্স অব সাউথ
এশিয়ান আমেরিকান লেবার-অ্যাসালের ১৫তম বার্ষিক কনভেনশন। এবারের
কনভেশনে মূলধারার উল্লেখযোগ্য নেতৃবৃন্দর উপস্থিতি ছিলো লক্ষ্য করার
মতো। কনভেনশনে বক্তারা বলেছেন, সাউথ এশিয়ান কমিউনিটি ঐক্যবদ্ধ
হলে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি সমৃদ্ধ হবে। তাই মূলধারার রাজনীতি যারা
যতবেশী সম্পৃক্ত হবেন, তা ততই অগ্রগামী থাকবেন। কনভেনশনে সাউথ
এশিয়ান অগ্রসরমান কমউিনিটিকে মূল ধারায় আরো বেশী সম্পৃক্ত
করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। গত রোববার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায়
নিউইয়র্কের শেরাটন লাগোরডিয়া ইষ্ট হোটেলে এই অনুষ্ঠানের
আয়োজন করা হয়। অ্যাসালের ১৫তম কনভেনশন বিভিন্ন শ্রেনী পেশার
মানুষের মিলন মেলায় পরিনত হয়। খবর ইউএনএ’র।
কনভেনশনে আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন নিউইয়র্ক সিটি মেয়র এরিক
এডামস ও ইউএস কংগ্রেসে মাইনরোটি লীডার কংগ্রেসম্যান
হেকিম জাফরিস। ভিডিও বার্তায় বক্তব্য রাখেন ইউএস সিনেটের লীডার
সিনেটর চাক শুমার। এতে চাক শুমার বলেন, আমি সাউথ এশিয়ান
কমিউনিটিকে ভালোবাসি। কারণ এই কমিউনিটি পরিশ্রমী এবং
অগ্রসরম্যান। তার নিজের ও আমেরিকার জন্য কঠোর পরিশ্রম করছে।
কনভেনশনে মেয়র এডামস তাঁর বক্তৃতায় সিটির নিরাপত্তার বিষয়ে
গুরুত্বারোপ করে বলেন এজন্য কোন ছাড় নয়। তিনি বলেন, আমরা
চ্যালেঞ্জিং সময় অতিবাহিত করছি। সম্মিলিতভাবে এই চ্যালেঞ্জ
মোকাবেলা করতে হবে। তিনি বলেন, সিটি হলে আমি আমার জব

করছি, আপনারা সকলেই আপনাদের জব যথাযথভাবে পালন করুন। আপনারা
যেমন একটি পরিবারের প্রধান, আমিও এই সিটির প্রধান। তাই
সিটিবাসীর কল্যাণে যা করার তাই করবো। এজন্য সকলের সহযোগিতা
চাই। আমাদের মনে রাখতে হবে হেইট ক্রাইম বন্ধ সহ ‘সিটির
নিরাপত্তা’ আমাদের প্রথম গোল। এব্যাপারে অভমি কোন আপোষ করবো
না। তিনি অ্যাসাল-এর কর্মকান্ডের প্রশংসা করেন এবং অ্যাসাল একটি
ভালো সংগঠন বলে উল্লেখ করেন।
মেয়রের বক্তব্যের পর অ্যাসাল চেয়ারম্যান মাফ মিসবা উদ্দিন তাঁকে
অ্যাসাল-এর লগো সম্বলিত ক্যাপ উপহার দেন।
কংগ্রেসম্যান হেকিম জেফিরিস তার বক্তব্যের শুরুতে অ্যাসাল-এর
কর্মকান্ডের প্রশংসা করে বলেন অ্যাসাল কমিউনিটির জন্য খুবই ভালো
কাজ করছে। তিনি কনভেনশনে উপ¯ি’ত ইউএস কংগ্রেসওম্যান গ্রেস
মেং-কে এশিয়ান কমিউনিটির ভালো বন্ধু হিসেবে উল্লেখ এবং তার
কর্মকান্ডেরও প্রশংসা করেন। হেকিম জাফরিস বলেন, আমি
ইমিগ্রান্ট। আমার বাবাও ছিলেন সোস্যাল ওয়ার্কার। আমার জীবনের
পথচলার সাথে অভিবাসীদের সাথে দারুন মিল রয়েছে। বলেন, আমিও
একজন লেবারের ঘরে জন্ম নেয়া মানুষ। সামাজিক কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে
আজকের অব¯’ানে এসেছি। প্রসঙ্গত তিনি বলেন, আমেরিকানদেও জন্য
ভালো হেলথ কেয়ার ব্যব¯’ার জন্য কাজ করছি। আর বিভিন্ন দাবী-দাওয়া
বাস্তবায়নে ইউনিয়নগুলো ভালো ভূমিকা রাখছে।
কংগ্রেসম্যান হেকিম জেফিরিস বলেন, আমি আপনাদের সাথে আছি
এবং থাকবো। আমার-আপনার লড়াই হ”েছ ভালো কমিউনিটি, ভালো
জীবনযাত্রা, সুশাসন, আইন শৃঙ্খলা, গণতন্ত্র আর শক্তিশালী অর্থনীতির
জন্য।
কনভেনশনে অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইউএস কংগ্রেস ওমেন গ্রেস
মেং, নিউইয়র্ক স্টেট কম্পোট্রোলার দিনাপোলি, নিউইয়র্ক সিটি
কম্পোট্রোলার ব্রাড ল্যান্ডার, কুইন্সবরো প্রেসিডেন্ট ডনোভ্যান
রিচার্ডস সস মূলধারার রাজনীতিক ও কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ।
কনভেনশনে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন কনভেনশন কমিটির চেয়ারম্যান
মূলধারার রাজনীতিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. নুরুন নবী। এছাড়া স্বাগত
বক্তব্য রাখেন অ্যাসালের ন্যাশনাল সেক্রেটারী মোহাম্মদ করিম চৌধুরী ও
অ্যাসাল এর ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট মাফ মিসবাউদ্দিন। কনভেশনে আরো
বক্তব্য রাখেন নিউইয়র্ক ষ্টেট অ্যাসেম্বলীম্যান ডেভিড ওয়েপ্রীন ও
জেনিফার রাজকুমার, নিউইয়র্ক সিটির কুইন্স বরো প্রেসিডেন্ট
ডনবান রিচার্ডস, বাংলাদেশী কমিউনিটির অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য

রাখেন জর্জিয়া ষ্টেট সিনেটর শেখ রহমান, ড. জয়নাল আবেদীন,
এটর্নী মঈন চৌধুরী, অধ্যাপক শাহাদত হোসেন, লিয়াকত হুসেন
আবু, শরাফত হোসেন বাবু, গোলাম ফারুক শাহীন, মাহমুদুল হাসান
প্রমুখ।
কনভেনশনে ‘লেজিলেটর অব দ্যা ইয়্যার’ হিসেবে নিউইয়র্ক সিনেটর
দিয়ানে স্যাভিনোকে সম্মাননা তুলে দেয়া হয়। এছাড়া
অ্যাসেম্বলিম্যান মাইকেল জে কুসিককে সম্মাননা দেয়া হয়।