ভিয়েতনামে সফররত চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং এবং দেশটির প্রধানমন্ত্রী ফাম মিন চিন গত (সোমবার) রাতে বৈঠক করেছেন। বৈঠককালে প্রেসিডেন্ট সি বলেন, ভিয়েতনামের পার্টি ও সরকারের নেতৃত্বে দেশের রাজনীতি ও সমাজ স্থিতিশীল, সংস্কার কাজ ব্যাপক সাফল্যমণ্ডিত আর আন্তর্জাতিক মর্যাদাও দিন দিন বাড়ে। চীন ও ভিয়েতনাম উভয়েই জাতীয় পুনরুত্থান আর দেশের দ্রুত উন্নয়ন কার্যক্রম রয়েছে, তাই অভিন্ন কল্যাণের সমাজ চেতনায় দু’দেশের সার্বিক কৌশলগত সহযোগিতা গভীরতর করা উচিত, যাতে দেশের জনগণকে কল্যাণ বয়ে আনা যায়।


সি জোর দিয়ে বলেছেন, দু’পক্ষের উচিত কৌশলগত সহযোগিতা জোরদার করে উচ্চপর্যায়ের আদান-প্রদান ঘনিষ্ঠতর করা, যৌথভাবে আধিপত্যবাদ, একতরফাবাদ, সংরক্ষণবাদের প্রতিবাদ করা, বৈশ্বিক উন্নয়ন প্রস্তাব, বৈশ্বিক নিরাপত্তা প্রস্তাব ও বৈশ্বিক সভ্যতা প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা, যাতে আন্তর্জাতিক সমতা ও ন্যায্যতা রক্ষা করা যায় এবং এশিয়া ও বিশ্বের শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধ উন্নয়ন নিশ্চিত করা যায়।


দু’পক্ষের উচিত গুণগতমান উন্নয়ন বাস্তবায়ন করে দু’দেশের যৌথভাবে আধুনিকায়ন বাস্তবায়নে সমর্থন দেওয়া। চীন ও ভিয়েতনামের স্থল ও সমুদ্র সংযুক্তির আঞ্চলিক প্রাধান্য প্রয়োগ করে বিভিন্ন শিল্প সহযোগিতার সুপ্তশক্তি বিশকিত করবে। ধাপে ধাপে অবকাঠামো ব্যবস্থাপনার নির্মাণের সহযোগিতা চালু করে পারস্পরিক যোগাযোগ ও পরিবহন মান উন্নীত করা, অবাধ বাণিজ্যের উন্নয়ন নিশ্চিত করা। ৫জি, এআই, পরিচ্ছন্ন জ্বালানি সম্পদ, ডিজিটাল অর্থনীতিসহ বিভিন্ন খাতের সহযোগিতা জোরদার করবে দু’দেশ। চলতি বছর দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৭৫তম বার্ষিকী, এ উপলক্ষ্যে দ্বিপাক্ষিক মৈত্রীর গল্প আর সহযোগিতার মাধ্যমে আধুনিকায়ন বাস্তবায়নের গল্প তুলে ধরা হবে।


ফাম মিন চিন বলেছেন, চীনা প্রেসিডেন্ট সি’র ভিয়েতনাম সফর দ্বিপাক্ষিক উচ্চপর্যায়ের আদান-প্রদানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও সুখী ব্যাপার, তার ঐতিহাসিক তাৎপর্য রয়েছে এবং তা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের দ্রুত উন্নয়ন ও সহযোগিতায় আরো বেশি প্রাণশক্তি যোগাবে।


তিনি আরো বলেন, ২০২৩ সালে প্রেসিডেন্ট সি’র ভিয়েতনাম সফরের পর থেকে দ্বিপাক্ষিক কৌশলগত আস্থা আরো বেড়ে গেছে এবং বাস্তব সহযোগিতায় অনেক সাফল্য অর্জন করেছে, দু’দেশের জনগণের মৈত্রী আরো গভীরতর হয়েছে। চীনের সাথে সম্পর্কের ওপর গুরুত্ব দেয় ভিয়েতনাম, চীনের অর্জিত সাফল্যের প্রতি শুভকামনা জানায় এবং চীনের দেশ প্রশাসন অভিজ্ঞতা, আত্মনির্ভরশীলতা এবং আত্ম-উন্নতির মনোভাব এবং চীনের উন্নয়নের পদ্ধতি শিখতে আগ্রহী। চীনের সাথে আর্থ-বাণিজ্য পুঁজি বিনিয়োগ, বিজ্ঞান প্রযুক্তি, পারস্পরিক যোগাযোগ ও পরিবহনসহ বিভিন্ন খাতের সহযোগিতা জোরদার করতে ইচ্ছুক, যাতে যৌথভাবে চ্যালেঞ্জ ও ঝুঁকি মোকাবিলা করা যায়। ভিয়েতনাম ও চীনের সাংস্কৃতিক বিনিময় বর্ষের কাজে লাগিয়ে জনগণের মৈত্রী আরো গভীরতর করবে। চীনের সাথে আন্তর্জাতিক ইস্যুতে সহযোগিতা জোরদার করবে ভিয়েতনাম, যাতে জটিল আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিতে বহুপক্ষবাদ ও আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা রক্ষা করা যায়।

সূত্র : সুবর্ণা- হাশিম-প্রেমা, চায়না মিডিয়া গ্রুপ।