সম্প্রতি লাওসের প্রধানমন্ত্রী সোনেক্সেই শিফান্দোন বোয়াও এশিয়া ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার আগে সিএমজিকে একটি বিশেষ সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বোয়াও এশিয়া ফোরাম বিভিন্ন দেশের জন্য পারস্পরিক শিক্ষার একটি মঞ্চ। তিনি চীনের দারিদ্র্যমুক্তি অর্জন সম্পর্কে বলেন, ‘এ খাতে চীন অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছে। যা অন্য দেশের দারিদ্র্যমোচনের জন্য একটি মডেল সৃষ্টি করেছে।’

এবারের বোয়াও এশিয়া ফোরামে তিনি প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি মনে করেন, এ ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ লাওস ও নানা উন্নয়নশীল দেশ ও সহযোগী অংশীদারের বিনিময় ও অভিজ্ঞতা শিক্ষার জন্য সহায়ক হবে। 

দু’দেশের সম্পর্ক নিয়ে লাওসের প্রধানমন্ত্রী জানান, চীন হচ্ছে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে বড় দেশ। লাওস ও চীন শুধু প্রতিবেশী দেশই নয় ,বরং দু’দেশও হচ্ছে অভিন্ন সমাজতান্ত্রিক আদর্শের অংশীদার। এর ভিত্তিতে দু’পার্টি ও দু’দেশের সরকার ও জনগণের সুন্দর ও ঐতিহ্যবাহী বন্ধুত্বও রয়েছে। 

চীন-লাওস অভিন্ন কল্যাণের সমাজ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, লাওস-চীন অভিন্ন কল্যাণের সমাজের ধারণা চীনের উত্থাপিত বৈশ্বিক উন্নয়ন উদ্যোগের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং দু’দেশের সহযোগিতার জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছেন, বিশেষ করে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ সহযোগিতা বাস্তবায়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। বর্তমানে, লাওস চীনের সঙ্গে ইতিবাচকভাবে নীতি বিনিময় চালিয়ে যাচ্ছে এবং দু’দেশের অভিন্ন কল্যাণের সমাজের নির্মাণকাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে দু’দেশের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় উন্নীত হবে।

চীনের সাফল্য অর্জনের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে তিনি জানান, চীন সমাজের সাংস্কৃতিক উন্নয়ন এবং পরিবেশ সুরক্ষার ক্ষেত্রে অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছে। বড় শহর বা ছোট শহর-সব জায়গার পরিবেশ উন্নত হয়েছে এবং সবুজ আচ্ছাদনের হার অনেক বেড়েছে। এই সবকিছু বিশ্বের উন্নয়নের ধারার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। চীন সম্পূর্ণরূপে সবুজ উন্নয়ন ও টেকসই উন্নয়ন বাস্তবায়ন করেছে। তিনি মন্তব্য করেন, চীনের সাফল্যের অভিজ্ঞতা থেকে লাওস অনেক কিছু শিখতে পারবে।

চীন-লাওস রেলপথ নিয়েও তিনি উচ্চ মূল্যায়ন করেন। তিনি বলেন, এই প্রকল্প লাওসের একটি কৌশলগত প্রকল্প এবং এটি ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগের চেতনার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। রেলপথটি যে ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছে, তার উচ্চ প্রশংসা করেন তিনি। এই রেলপথটি আশেপাশের অঞ্চলকে সুবিধা দিচ্ছে ও উন্নত করছে এবং এর ফলে সেখানকার জনগণের জীবনযাত্রার মানও উন্নত হয়েছে।

সাক্ষাৎকারে তিনি ছোটবেলায় চীনে শিক্ষাগ্রহণের স্মৃতি ও দু’দেশের জনগণের গভীর বন্ধুত্বের কথা স্মরণ করেন। লাওস ও বিশ্বের উন্নয়নে চীনের অবদানকে তিনি প্রশংসা করেন। ভবিষ্যতে ডিজিটাল অর্থনীতি, পরিচ্ছন্ন জ্বালানি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসহ বিভিন্ন খাতে দু’দেশের সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রত্যাশাও ব্যক্ত করেন তিনি।

সূত্র : আকাশ-তৌহিদ-জিনিয়া, চায়না মিডিয়া গ্রুপ।