বাংলাদেশ দূতাবাস, বার্লিন আজ যথাযোগ্য মর্যাদায় ও বিনম্র শ্রদ্ধায় মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করেছে। মান্যবর রাষ্ট্রদূত জনাব মো.মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, এনডিসি, মহোদয়ের নেতৃত্বে দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারির উপস্থিতিতে দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণের মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচীর সূচনা করা হয়। তারপর মান্যবর রাষ্ট্রদূত উপস্থিত সকলকে নিয়ে শহিদ স্মরণে পুষ্পস্তবক অর্পন করে ২১শের শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে প্রেরিত বাণীসমূহ পাঠের পর উপস্থিত দূতাবাস সদস্যগণ ও আগত অতিথিদের অংশগ্রহণে একটি সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।

মান্যবর রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যে শহিদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এর গুরুত্ব, ইতিহাস ও তাৎপর্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন যে, বায়ান্নো’র ভাষা আন্দোলনকেই বাংলাদেশ রাষ্ট্র সৃষ্টির পথে আন্দোলনের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে মনে করা যায়। এ প্রেক্ষিতে ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত বিস্তৃত ভাষা আন্দোলনের বিশাল প্রেক্ষাপটে ততোধিক বিশালত্ব নিয়ে বিরাজমান আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। 

ভাষা আন্দোলনের প্রথম পর্যায়ে ১৯৪৭-৪৮, এমনকি দ্বিতীয় পর্যায়ে ১৯৫২ সালে জেলে থেকেও বঙ্গবন্ধু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তাই ভাষা আন্দোলন ও বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা সংগ্রাম, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ একে অপরের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন সম্পর্কে জড়িত। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি তারিখ বাংলাকে মাতৃভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য জীবন উৎসর্গকারী সকল ভাষা শহিদকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে তিনি আরও বলেন, ১৯৯৯ সালে জাতিসংঘের ইউনেস্কো কর্তৃক ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণায় কয়েকজন প্রবাসী বাঙ্গালির সাথে সরকারপ্রধান হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদানও স্মরণযোগ্য। ভাষা আন্দোলনের গৌরবময় দিন একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি লাভ বিশেষ ভাবে বিদেশিদের বাংলা চর্চায় উৎসাহ যুগিয়েছে।

দূতাবাসের আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বার্লিনস্থ প্রবাসী বাংলাদেশি শিল্পীগণ ২১শের গান, দেশাত্নবোধক গান ও নৃত্য পরিবেশন করেন। পরিশেষে, অনুষ্ঠানে যোগদানকৃত সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে এবং দেশ ও জাতির মঙ্গল ও উন্নয়ন কামনা করে মান্যবর রাষ্ট্রদূত মহোদয় অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।