অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা ১০০ কিলোমিটার গতিতে আঘাত হেনেছে সেন্টমার্টিন ও টেকনাফে। চলছে ঘূর্ণিঝড়টির তাণ্ডব। ঝোড়ো বাতাসে  লণ্ড ভণ্ড হয়ে গেছে সেন্টমার্টিন দ্বীপের ঘরবাড়ি ও গাছপালা। অনেক বাড়িঘর উড়িয়ে নিয়ে গেছে। ঝড়ের তাণ্ডবে গাছ পড়ে এক নারীর মৃত্যুর খবরও পাওয়া গেছে । টেকনাফ উপজেলায়ও প্রচণ্ড গতিতে বাতাস বইছে। বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ছে তীরে। আজ দুপুর থেকে এই তাণ্ডব শুরু হয়। তবে ঘূর্ণিঝড়টির মূল কেন্দ্রের আঘাত শুরু হবে তিনটার দিকে। এরপর কমে আসবে বাতাসের তীব্রতা।    এদিকে সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান,  এই মুহূর্তে সেন্টমার্টিনে বাতাসের গতি প্রচুর।  অনেক ঘরবাড়ি উড়িয়ে নিয়ে গেছে। শুনেছি গাছ পড়ে এক নারীর মৃত্যুও হয়েছে। কিন্তু বৈরি পরিবেশের কারণে বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। সেন্টমার্টিনের স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মালেক বলেন, বাতাসের গতি তীব্র থেকে তীব্রতর। সমুদ্রের পানি বাতাসে উড়িয়ে নিচ্ছে। বিচের ভেজা মাটি তুলে নিচ্ছে তীব্র বাতাসে। মানুষের ঘর বাড়ির টিন, ছাউনি, কাঠ, বাঁশ উড়িয়ে নিচ্ছে। বড় বড় গাছ ও নারিকেল গাছ দুমড়ে মুচড়ে পড়েছে। দোকানপাট ভেঙে উড়ে গেছে। পুরো সেন্টমার্টিনে বৃষ্টির পানি ও বাতাসের তীব্রতায় কিছুই দেখা যাচ্ছে না। সব ধোঁয়াশা হয়ে আছে।

ঘূর্ণিঝড় মোখা মূল আঘাত মিয়ানমারের চলছে। যে কারণে বাংলাদেশের জন্য অনেকটাই ঝুঁকি কেটে গেছে।  টেকনাফ ২৬ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দেখা যায়, প্রচণ্ড বাতাস বইছে।  রোহিঙ্গারা নিজ নিজ ঘরে অবস্থান করে আছে। অনেকে স্কুল মাদরাসায় আশ্রয় নিয়েছে। পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ঘরগুলো অতি ঝুঁকিতে রয়েছে। নাফ নদী ও সাগর উত্তাল রূপ ধারণ করেছে। আছড়ে পড়ছে বড় বড় ঢেউ। বাতাসের গতির জন্য বাইরে বের হওয়া অনিরাপদ হয়ে উঠেছে। এখনো কোন ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।   এদিকে দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ ১০০ কিলোমিটার গতিবেগে সেন্টমার্টিনে আঘাত হেনেছে। ঝড়ো বাতাসে সেন্টমার্টিন দ্বীপের ঘরবাড়ি ও বিল্ডিং কাঁপছে। সেই সঙ্গে প্রচুর বৃষ্টিপাত হচ্ছে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের মূল কেন্দ্র বিকাল ৩টার দিকে আঘাত হানবে। আজ দুপুর ১টায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান।   তিনি বলেন, মোখার মূল কেন্দ্র মিয়ানমারের দিকে হওয়ায় বাংলাদেশের ঝুঁকি কমে গেছে। এই আবহাওয়াবিদ আরও জানান, বিকাল ৪টার দিকে জোয়ারের প্রভাবে সেন্টমার্টিন দ্বীপের পানির উচ্চতা বেড়ে যাবে। ৮ থেকে ১২ ফুট পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।