খবর প্রকাশিত: ২৭ এপ্রিল, ২০২৫, ০২:৩৫ পিএম
পুরান ঢাকার ডালপুরি-গোলগুল্লা-সিঙ্গারা......
লুৎফর রহমান রিটন
জন্মেছি কবে সেই পুরনো ঢাকায়
কতো স্মৃতি রিকশার টায়ারে, চাকায়।
সরু সরু অলিগলি হাজারে হাজার
অবিরাম হইচই যেনো বা বাজার!
সুবেহ সাদেকের সুরে জেগে ওঠে পাড়া
জেগে ওঠে ডালপুরি আর সিঙ্গারা।
পুরান ঢাকা কি কভু থাকে নিশ্চুপ?
ঝাঁপ-তোলা হোটেলের খাপখোলা রূপ।
খুব বেশি আলো নেই তবু ঝলমল
থালা-বাটি-গ্লাসগুলো নয় উজ্জ্বল।
নড়বড়ে আসবাব চেহারা গরিব
তবু তার তরে সবে থাকে উদ্গ্রীব।
সারাদিন কতো লোক দলে দলে আসে
পরোটা ও ভাজি ওরা খুব ভালোবাসে।
পছন্দ তালিকায় আরো থাকে নান
ঝাঁপ তোলা হোটেলের ঘ্রাণ অফুরান!
সর ওঠা দুধ-চা-র নেই কোনো জুড়ি
সকালের নাস্তায় থাকে ডালপুরি।
ডালপুরি ডালপুরি ডাল ডাল ডাল
তোর সাথে শৈশব-যৌবন কাল
কাটিয়েছি আহা সেই মধুময় দিন
তোর স্মৃতি অবিনাশী চির অমলিন।
গোলগাল চেহারার ফুলো ফুলো ঢং
ডুবো তেলে ভাজা হলে হলুদাভ রঙ।
ভেতরে ডালের পুর হালকা প্রলেপ
মৃদু ঝাল জিভে জল করে নিক্ষেপ।
তোর সাথে ছিলো আরো গোলগুল্লারা
হালকা মিষ্টি স্বাদ রূপে চোখ কাড়া।
কিঞ্চিৎ ধোঁয়া ওঠা টাটকা গরম
ওপরটা মচমচে ভেতরে নরম।
লালচে খয়েরি রঙ কী যে উচ্ছ্বল
ডুবো তেলে ভাজা যেনো পিংপং বল।
সিঙ্গারা সিঙ্গারা তিনখানা শিং
তোকে জয় করেছিলো কোন তেনজিং?
তিনদিকে আহা তোর এভারেস্ট চূড়ো
তোকে খুব ভালোবাসে ছেলে আর বুড়ো।
সকলেরই প্রিয় তুই ওরে সিঙ্গারা
সাধ্য কি বেঁচে থাকি বল তোকে ছাড়া!
পেটের ভেতরে তোর কতো জাদু ভরা
রহস্য দেখে তোর চোখ ছানাবড়া।
কী করে ঢুকলো তোর পেটে এই পুর?
সিঙ্গারা রূপে গুণে স্বাদে ভরপুর।
পুরান ঢাকার স্মৃতি যায় কী রে ভোলা?
অটোয়ায় ছড়া লেখে ঢাকার এক পোলা...।
অটোয়া ১৬ নভেম্বর ২০২০
[ ছবিসূত্র/ গোলগুল্লার ছবিটি তুলেছেন আলোকচিত্রী আক্কাস মাহমুদ। ডালপুরি আর সিঙ্গারার ছবি দুটি ইন্টারনেট থেকে নেয়া। ]