NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, রবিবার, এপ্রিল ২৭, ২০২৫ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
জব্বারের বলীখেলায় আবারও চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার ‘বাঘা’ শরীফ Bangladesh reaffirms commitment to fully Implement the CHT Peace Accord Kashmir Violence Conflict can be Solved Diplomatically or Needs a Retaliation Plan Against Pakistan ব্রেন স্ট্রোক পরবর্তী সময়ে সেরে ওঠার যুগান্তকারী ওষুধ আবিষ্কার নিউইয়র্কে প্রবাসীদের সাথে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের মত  বিনিময় নিজেকে রাজা-বাদশাহ ভাবছেন ট্রাম্প! ‘দাগি’ দেখতে কয়েদির বেশে সিনেমা হলে শতাধিক নিশো ভক্ত Attorney General James Wins Case Against Google for Monopolies in Digital Advertising নিউইয়র্কে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ সংবাদ সম্মেলন নানা অভিযোগ উত্থাপন : বাংলাদেশ রেমিট্যান্স মেলা  বয়কটের আহবান নিউইয়র্কের এস্টোরিয়ায় পুলিশের গুলিতে মানসিকভাবে অসুস্থ  এক ব্যক্তির মৃত্যু
Logo
logo

শুরু হলো মাসব্যাপী ‌সংগীতের জাতীয় উৎসব ও সম্মেলন


মশিউর আনন্দ প্রকাশিত:  ২৭ এপ্রিল, ২০২৫, ০৫:৫৫ এএম

শুরু হলো মাসব্যাপী ‌সংগীতের জাতীয় উৎসব ও সম্মেলন

 

 

মশিউর আনন্দ: দেশজুড়ে সংগীত সংশ্লিষ্টদের ঐক্যবদ্ধ করে দেশীয় সংস্কৃতিকে আরও বিকশিত করার লক্ষ্যে বর্ণাঢ্য আয়োজনে উদ্বোধন হলো সংগীতের প্রথম জাতীয় উৎসব ও সম্মেলনের। প্রথমবারের মতো এই উৎসবের আয়োজন করেছে সংগীত ঐক্য বাংলাদেশ। দেশের বিভিন্ন বিভাগে মাসব্যাপী অনুষ্ঠিতব্য এই উৎসবের শুরুটা হলো ১৭ জুন (শুক্রবার) চট্টগ্রামের জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণ থেকে। উৎসবের উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি। শুক্রবার বিকালে উৎসবের উদ্বোধন শেষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কে এম খালিদ এমপি বলেন, ‘করোনাকালীন সময়ে ২০ হাজার সংগীতশিল্পীকে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার সময় শিল্পীদের বিশেষ সহায়তা তহবিলে ছিল ৩০ কোটি টাকা। এখন ফান্ড ৫০ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়েছে।’  শিল্পীদের যেসব দাবি আছে তা বিবেচনা করার আশ্বাস দেন মন্ত্রী।  

সংগীত ঐক্য বাংলাদেশের সভাপতি রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার সভাপতিত্বে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সংগীত ঐক্য বাংলাদেশ-এর অন্যতম মহাসচিব এবং গীতিকবি সংঘ বাংলাদেশ-এর সভাপতি শহীদ মাহমুদ জঙ্গী। বক্তব্য রাখেন সংগীত ঐক্য বাংলাদেশ-এর মহাসচিব এবং মিউজিক কম্পোজার্স সোসাইটি বাংলাদেশ-এর সভাপতি নকীব খান। আরও বক্তব্য রাখেন সংগীত ঐক্য বাংলাদেশ-এর আরেক মহাসচিব এবং সিংগার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-এর সাধারণ সম্পাদক খ্যাতিমান কণ্ঠশিল্পী কুমার বিশ্বজিৎ। সভাপতির বক্তব্যে বরেণ্য রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা বলেন, ‘সারা দেশের সংগীতের সঙ্গে জাড়িতদের এক ছাতার নিচে আনায় হচ্ছে এ সংগীত ঐক্য বাংলাদেশ-এর লক্ষ্য। ৫০ বছর ধরে গীতিকবি, সুরস্রষ্টা ও কণ্ঠশিল্পীরা নানা অনিয়ম, অবহেলা আর প্রাপ্য সম্মান ও সম্মানী থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছেন। এ পরিস্থিতি উত্তরনের লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে সংগীত ঐক্য বাংলাদেশ।’ সংগীত ঐক্য বাংলাদেশ- এর মহাসচিব এবং গীতিকবি সংঘ বাংলাদেশ-এর সভাপতি শহীদ মাহমুদ জঙ্গী তার বক্তব্যে সংগীতশিল্পীদের উন্নয়নে বেশ কিছু দাবি তুলে ধরে বলেন, ‘কপিরাইট অফিসের যে ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে সেখানে শিল্পীদের পৃথক অফিস বরাদ্দ দেওয়ার পাশাপাশি সংগীত একাডেমি গড়ে তোলার দাবি জানাই।’ এছাড়া তিনি, সরকারি হাসপাতালে সংগীতশিল্পীদের জন্য পৃথক সিট রাখাসহ শিল্পীদের জীবন মান উন্নয়নে একগুচ্ছ দাবি তুলে ধরেন।  সংগীত ঐক্য বাংলাদেশ-এর আরেক মহাসচিব নকীব খান বলেন, ‘সংগীতের উন্নয়নে সকলকে কাজ করতে হবে। পৃথিবীর সপ্তম ভাষা বাংলা। বাংলা গানকে পৃথিবীর দরবারে পরিচিত করতে সকল শিল্পীদের একযোগে কাজ করতে হবে।’  সংগীত ঐক্য বাংলাদেশ-এর আরেক মহাসচিব কুমার বিশ্বজিৎ বলেন, ‘সংগীত অঙ্গনে সম্পৃক্ত সকলকে নিয়ে আমাদের এ উদ্যোগ। এ উদ্যোগ সফল করার জন্য সকলকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানাই।’ এরপর সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ শুরু হয় বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের প্রথম পর্ব। যার মধ্য দিয়ে উঠে আসে চট্টগ্রামের সংগীত ও সংস্কৃতি। শুরুটা হয় সমরজিৎ রায়ের উচ্চাঙ্গসংগীত পরিবেশনার মাধ্যমে। এরপর পর্যায়ক্রমে মঞ্চে গান পরিবেশন করেন চট্টগ্রাম সংগীত ভবনের শিল্পীরা, প্রেমসুন্দর বৈষ্ণবের কণ্ঠে চট্টগ্রামের প্রচলিত আঞ্চলিক গান, রাঙামাটির জুম ঈসথেটিকস কাউন্সিল-এর পাহাড়ি ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীদের পরিবেশনা, চট্টগ্রামের ব্যান্ড দূরবীন।

 

দ্বিতীয় পর্বে সংগীত পরিবেশন করেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, কুমার বিশ্বজিৎ, হাসান আবিদুর রেজা জুয়েল, জয় শাহরিয়ার ও কিশোর দাশ। রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ মঞ্চে পর্যায়ক্রমে মঞ্চে আসে দেশের তিন জনপ্রিয় ব্যান্ড রেনেসাঁ, দলছুট ও সোলস। সংগীত ঐক্য বাংলাদেশ-এর অন্যতম মহাসচিব ও গীতিকবি সংঘ বাংলাদেশ এর সভাপতি শহীদ মাহমুদ জঙ্গী জানান, চট্টগ্রামের সফল আনুষ্ঠানিকতা শেষে আগামী ২৪ জুন এই উৎসব হচ্ছে সিলেট জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে। এরপর ১ জুলাই হচ্ছে বরিশাল জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে। এরপর ১৬ জুলাই হবে উৎসবের চূড়ান্ত অনুষ্ঠান ও জাতীয় সম্মেলন ঢাকায়- বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি কমপ্লেক্স-এ। পুরো উৎসব ও সম্মেলনের পৃষ্ঠপোষক সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের গীতিকবি, সুরস্রষ্টা ও কণ্ঠশিল্পীদের প্রাপ্য সম্মান ও সম্মানি পরিস্থিতি উন্নয়নের লক্ষ্যে সংগীতের তিন সংগঠন গীতিকবি সংঘ বাংলাদেশ, মিউজিক কম্পোজার্স সোসাইটি বাংলাদেশ ও সিংগার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-এর সম্মিলিত মঞ্চ ‘সংগীত ঐক্য বাংলাদেশ’। সংগীতের সকল পক্ষের মাঝে যোগসূত্র তৈরি ও যৌথভাবে প্রণীত উন্নয়ন প্রস্তাবগুলো নিয়ে সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও কপিরাইট দফতরের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করছে এই সংগঠন। সংগীত ঐক্য বাংলাদেশ মনে করে, ৫০ বছর ধরে গীতিকবি, সুরস্রষ্টা ও কণ্ঠশিল্পীরা নানা অনিয়ম, অবহেলা আর প্রাপ্য সম্মান ও সম্মানি থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছেন। এ পরিস্থিতি উত্তরণের লক্ষ্যে গত বছর অর্থাৎ ২০২১ সালের ১০ জুলাই বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো গীতিকবি, সুরকার ও কণ্ঠশিল্পীরা এবার এক ছাতার নিচে আসেন। গঠিত হয় সংগীত ঐক্য বাংলাদেশ। সার্বিক সংগীতের মানোন্নয়ন, সম্মান ও সম্মানির জন্য একসঙ্গে লড়াই করার প্রত্যয় নিয়ে এই প্ল্যাটফর্ম গঠন করা হয়। সংগীত ঐক্য বাংলাদেশ একটি অরাজনৈতিক ও অলাভজনক সংগঠন। সংগীতের সকল পক্ষকে আস্থায় নিয়ে কাজ করে যাওয়ার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করার চেষ্টাই এই সংগঠনের উদ্দেশ্য। সংগীত ঐক্য বাংলাদেশের স্বপ্ন, সংগীতের পাশাপাশি দেশের প্রয়োজনে জনগণের জন্যেও কাজ করা।