NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, মঙ্গলবার, জুন ১৭, ২০২৫ | ৩ আষাঢ় ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিতর্কিত তিন সংসদ নির্বাচনে জড়িতদের ভূমিকা তদন্তে কমিটি গঠনের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার " ইসরায়েল আন্তর্জাতিক পারমাণবিক স্থাপনা আইন ভঙ্গ করেছে এবং শীর্ষ ইরানি বিজ্ঞানীদের হত্যা করেছে” ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের মধ্যে বৈঠক যুক্তরাষ্ট্রের ২০টি হলে শাকিব খানের ‘তান্ডব’র শুভ মুক্তি Iran Attack, a Foggy Peace and Truce Deal in Gaza - Dr Pamelia Riviere ফুলেল শুভেচ্ছায় অভিনন্দিত লায়ন শাহ নেওয়াজ পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাসহ ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরাইল ভারতীয় বিধ্বস্ত উড়োজাহাজে কারও জীবিত থাকার সম্ভাবনা নেই বিয়ানীবাজারবাসীদের উদ্যোগে সাংবাদিক ও লেখক মুস্তাফিজ  শফি সংবর্ধিত
Logo
logo

মিয়া মনিরুল আলম, বৃটেন প্রবাসী একজন অতি জনপ্রিয় কম্যুনিটি লিডার ইন্তেকাল করেছেন


মোহাম্মদ রফিক উদ্দিন চৌধুরী রানা প্রকাশিত:  ১৭ জুন, ২০২৫, ০৪:২৮ এএম

মিয়া মনিরুল আলম, বৃটেন প্রবাসী একজন অতি জনপ্রিয় কম্যুনিটি লিডার ইন্তেকাল করেছেন

মিয়া মনিরুল আলম, বৃটেন প্রবাসী একজন অতি জনপ্রিয় কম্যুনিটি লিডার গত রবিবারে লন্ডনে একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্নাহ লিল্লাহি ওয়া ইন্নাহ ইলাহির রাজিউন)।

মিয়া মনিরুল আলম ভাইয়ের মৃত্যু সংবাদ শোনার পর এই মহৎপ্রাণ মানুষের সাথে  আমার দীর্ঘদিন সম্পর্কের বিভিন্ন পর্যায়ে নানান কর্মকাণ্ডের স্মৃতি যেন চোখের সামনে ভেসে উঠছে। তার অল্প কিছু না লিখে চুপ করে থাকতে পারলাম না।

মিয়া মনিরুল আলম বৃটেনে, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের সংগঠক একজন সত্যিকারের বীর মুক্তিযোদ্ধা, যাঁর সাথে আমার প্রথম সাক্ষাত হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের পরে, ১৯৭২ সালে মৌলভীবাজার শহরে। উনি তখন বিয়ে করার জন্য দেশে এসেছিলেন। উনার বিয়েতে আমি উপস্থিত ছিলাম। বিয়ে করেছিলেন আমার এক ঘনিষ্ট বন্ধু মোক্তাদিরের এক ছোট বোনকে যারা মুসলিম কোয়ারটারে আমাদের প্রতিবেশী ছিলেন। খুব ধুমধাম করে মনির ভাই বিয়ে হয়। আমরা পাড়ার সবাই অনেক মজা করি। একজন স্মার্ট, সুন্দর, সজ্জন মনির ভাই সকলের প্রিয় হয়ে উঠেছিলেন।বিয়ের পর উনি অনেকদিন শহরে ছিলেন। শহরের ক্রীড়া সংস্কৃতি সবকিছুর সাথে একাকার হয়ে মিশে গিয়েছিলেন। শহরের ছোট বড় সর্বজনের প্রিয় পাত্র হয়ে উঠেছিলেন মনির ভাই।১৯৭৩ সালের শেষের দিকে আমি ঢাকা শহরে চলে যাই। মনির ভাইও লন্ডন চলে যান স্ত্রী সহ।

মনির ভাইয়ের সাথে পারিবারিক এবং ব্যক্তিগত ঘনিষ্টতা শুরু হয় ১৯৭৮ সালের প্রথম দিকে আমার বন্ধু মোক্তাদিরের আরেক ছোট বোন মনি’র সাথে আমার বিয়ে হওয়ার পর।

মনির ভাইকে আরও জানতে পারি বুঝতে পারি যখন উনি ১৯৮২ সালে আবার দেশে আসেন। ঢাকা শহরে বাডী কেনার জন্য উনার সাথে অনেক দৌড়াদৌড়ি করি। শ্রীমঙ্গল শহরে উনি মার্কেট করার জন্য জমি কিনেন। সব কিছুতেই উনি আমাকে রাখতেন। কখনও ঢাকা যাওয়া আবার ফিরে আসা ইত্যাদি। আমরা সম্পর্কে ভায়রা হলেও অন্তরঙ্গ বন্ধুর মতোই ছিলাম। ১৯৮৫ সনে আমি রাজনগর উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করি, মনির ভাই তখন দেশে ছিলেন না তবে তার আত্মীয় স্বজন সবাই আমার নির্বাচনের জন্য অনেক কাজ করেন। উনি উপস্থিত না থেকেও লন্ডন থেকে আর্থিক সহায়তাসহ অনেক সহায়তা করেন এবং মনোবল জোগান।

আমি লন্ডনে অনেকবারই গিয়েছি, রাতদিন উনার সাথে ঘুরেছি, বিভিন্ন কম্যুনিটি ইভেন্টে গিয়েছে। উনি যে কত জনপ্রিয় ছিলেন, সেটা নিজ চোখে দেখেছি বা লোক মুখেও শুনেছি। মনির ভাই নিউ ইয়র্কেও এসেছেন অনেকবার।

২০০০ সালে আমি যখন দি অপটিমিস্টস্ প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ নেই, তখন বৃটেন থেকে উনি ও উনার স্ত্রী রোকেয়া আপা শতভাগ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে এগিয়ে আসেন। তখন আমাদের ইচ্ছা ছিল দি অপটিমিশটকে ইউরোপ ও নর্থ আমেরিকা নিয়ে সংগঠিত করা।আমি ২০০২ সালে ইংল্যান্ড যাই, মনির ভাই, রোকেয়া আপা আমাকে বিভিন্ন শহরে মিটিং করে অপটিমিস্টস্-এর কার্যক্রম প্রচারে পূর্ণ সহযোগিতা করেন। (সংযুক্ত ছবি গুলি ২০০৮ সালে নিউ ইয়রকে অপটিমিশট এর বার্ষিক সাধারন সভায় মিয়া মনিরুল আলম, অপটিমিশট ইউকে কোঅরডিনেটর রওশানারা আলমের)
আমি ফেইসবুকে গত ২ বছর থেকে ইনএকটিভ, তবে আজ মনির ভাই সম্পর্কে কিছু না বলা থেকে বিরত থাকতে পারলাম না।

মিয়া মনিরুল আলম ভাই, আপনার মুল্যায়ন করবেন দেশবাসি, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের আক্রমণের বিরুদ্ধে বৃটেনে আপনাদের দুর্বার আন্দোলন জয়বাংলার স্বাধীনতা ত্বরান্বিত করেছে। আপনাদের আন্দোলনের কারনেই বৃটিশ এমপিরা, রাজনীতিবিদরা ১৯৭১ সালে রণাঙ্গনে আমাদের মতো মুক্তিযোদ্ধাদের দেখতে গিয়েছিলেন এবং একজন এমপি আপনি সহ লন্ডন প্রবাসী আরো ২/১ জনের কথা আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন।মনির ভাই, আমরা আপনাকে ভুলবো না। বাংলাদেশ যতদিন আছে, আপনারা মনির ভাইসহ লন্ডনের বীর যোদ্ধাদেরকে জাতি চিরদিন স্মরণ করবে। জাতির পিতা বংগবন্ধুও ১৯৭২ সালে আপনাদের আন্দোলনকে স্বীকৃতি দিয়ে গিয়েছেন।

একজন মুক্তি যোদ্ধা হিসাবে আপনাকে আজ জানাজার দিন শেষ বিদায়ী স্যালুট জানাচ্ছি। অপটিমিস্টস্-এর বর্তমান চেয়ারম্যান মিনহাজ আহমদ-এর পক্ষ থেকে এই চ্যারিটির প্রতিষ্ঠালগ্নে লন্ডন থেকে বা নিউ ইয়র্ক এসে সহযোগিতা করার জন্য অশেষ কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
মনির ভাই নেই, কিন্তু তার মত এই মহান পরোপকারী প্রাণোচ্ছল মানুষটির স্মৃতি বহুকাল বেঁচে থাকবে।

মুহিব, রেজু, সোমা ও রুহুল, তোমাদের পিতার ইন্তেকালে আমরা সবাই দুঃখ ও বেদনাহত। আললাহ এই শোক সহ্য করার ক্ষমতা তোমাদের মা সহ পরিবারের সবাইকে দিন, নিউ ইয়রক থেকে এই দোয়া করা ছাড়া আর কিছু করার ক্ষমতা আমাদের নেই। তোমাদের খালার বিষয় সকলের জানা আছে, উনি এয়ার ট্রাভেল করেন না আর এই মুহুরতে ইচ্ছে থাকলেও অসুস্থতার জন্য আমি লন্ডনে আসতে পারছি না।
আললাহ তোমাদের সবাইকে হেফাজতে রাখুন। আমিন।