NYC Sightseeing Pass
ঢাকা, রবিবার, জুন ১৫, ২০২৫ | ১ আষাঢ় ১৪৩২
ব্রেকিং নিউজ
" ইসরায়েল আন্তর্জাতিক পারমাণবিক স্থাপনা আইন ভঙ্গ করেছে এবং শীর্ষ ইরানি বিজ্ঞানীদের হত্যা করেছে” ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের মধ্যে বৈঠক যুক্তরাষ্ট্রের ২০টি হলে শাকিব খানের ‘তান্ডব’র শুভ মুক্তি Iran Attack, a Foggy Peace and Truce Deal in Gaza - Dr Pamelia Riviere ফুলেল শুভেচ্ছায় অভিনন্দিত লায়ন শাহ নেওয়াজ পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাসহ ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরাইল ভারতীয় বিধ্বস্ত উড়োজাহাজে কারও জীবিত থাকার সম্ভাবনা নেই বিয়ানীবাজারবাসীদের উদ্যোগে সাংবাদিক ও লেখক মুস্তাফিজ  শফি সংবর্ধিত ট্রাম্পের নতুন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর, যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন উত্তেজনা চরমে বিক্ষোভে উত্তাল লস অ্যাঞ্জেলেসে ন্যাশনাল গার্ড বাহিনী, ডেমোক্র্যাটদের ক্ষোভ
Logo
logo

কলের এই যুগেও গরু দিয়ে হালচাষ করেন গাইবান্ধার মোজাম্মেল


এম আব্দুর রাজ্জাক প্রকাশিত:  ১৫ জুন, ২০২৫, ০৩:৪৫ এএম

কলের এই যুগেও গরু দিয়ে হালচাষ করেন গাইবান্ধার মোজাম্মেল

এম আব্দুর রাজ্জাক উত্তরবঙ্গ থেকে :  জোড়া গরু জুত করে বাঁধা হয়েছে জোয়ালে। দুটি গরুর মুখেই টোনা আঁটা। কিন্তু মোজাম্মেল হকের মুখের বিরাম নেই– হু, হট, হট। ডাইনে বললে ডানে যাচ্ছে গরু, বাঁয়ে বললে বামে। মনের সুখে হালচাষ করছেন মোজাম্মেল।সম্প্রতি বিস্মৃতপ্রায় এ দৃশ্যের দেখা মিলল গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার কুমারগাড়ী গ্রামে। গ্রামীণ বাংলায় একসময়ের অতি পরিচিত এ দৃশ্যের জায়গা অনেক আগেই দখলে নিয়েছে ইঞ্জিনচালিত কলের হাল। মোজাম্মেল হকের বাড়ি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ডুমুরগাছা গ্রামে। এটি পলাশবাড়ীর সীমান্তবর্তী কুমারগাড়ীর লাগোয়া।

কুমারগাড়ী গ্রামের কজন জানান, অনেক এলাকায় এখন বিস্মৃতপ্রায় হলেও এ এলাকায় মোজাম্মেল হকের কল্যাণে মাঝেমধ্যেই গরুর হালের দেখা মেলে। আশপাশে গোবিন্দগঞ্জ ও পলাশবাড়ীর কয়েক গ্রামের মধ্যে মোজাম্মেলের সহ গরুর হাল রয়েছে মোটে তিনটি। অথচ আগে প্রতি গেরস্তবাড়িতেই গরুর হাল ছিল বাধ্যতামূলক। এলাকার বয়সী লোকজন বলেন, সাত সকালে গরু আর লাঙল কাঁধে নিয়ে মেঠোরাস্তা ধরে জমিতে হালচাষ করতে যাওয়া একসময় পুরো বাংলাদেশে ছিল খুব পরিচিত দৃশ্য। কিন্তু গত তিন দশকে এ দৃশ্য প্রায় পুরোটাই পালটে গেছে। গরুর হালের এ জায়গা এখন নিয়েছে কলের হাল। অনেক এলাকার শিশুরা টেলিভিশন ছাড়া গরু দিয়ে হালচাষ চোখেই দেখেনি। হয়ত বাপ-দাদার মুখে শুনেছে।

ডুমুরগাছাসহ কয়েকটি গ্রামের লোকজন কুমারগাড়ীর ছাতিয়ানতলায় বাজার করেন। এ বাজারের কয়েকজন জানান, আজকাল গরুর হাল চোখে পড়ে কম। তারা গরুর বদলে কলের হাল দিয়েই চাষবাস করেন। ছাতিয়ানতলা বাজারে গোখাদ্য, রাসায়নিক সার ও বালাইনাশকসহ মনিহারি দোকান করেন টিটু মন্ডল। তিনি বলেন, কলের হালে দ্রুত অনেক জমি চাষ করা যায়। সময় লাগে কম। এ কারণে দ্রুত এ হাল জনপ্রিয়তা পেয়েছে। কলের হালের এই যুগেও কেন পুরাতন গরুর হাল ধরে রেখেছেন– এ প্রশ্নের উত্তরে মোজাম্মেল বলেন, প্রথমত বাপ-দাদার এ পেশা তিনি ছাড়তে চাননি। ছোটবেলা থেকে হালচাষ শিখেছেন। এটা তার অভ্যাস হয়ে গেছে।

গরুর হালের এ চাষী জোর দিয়ে বলেন, ‘আমার হালের কাছে কলের হালের খাওয়া (পাত্তা) নেই। কলের হালে চাষ দিয়ে জমিতে যে ফসল ফলবে, গরুর হালচাষে একই জমিতে তিনগুণ ফসল হবে। তাই সময় একটু বেশি লাগলেও গরুর হালচাষ লাভজনক।’ গরুর হালের চাহিদা কেমন– জানতে চাইলে মোজাম্মেল বলেন, তিনি নিজের জমি চাষ করেও অন্যের জমি চাষের ‘অর্ডার’ পান। এ জন্য দিনে পাঁচ শ করে টাকা নেন তিনি। তবু সব চাহিদা পূরণ করার সময় পান না।

গরুর হাল দিয়ে চাষ লাভজনক– মোজাম্মেলের এমন মন্তব্যে সায় দিলেন কৃষক শাহারুল খন্দকারও। তিনি বললেন, গরুর হাল দিয়ে চাষ করলে জমি অনেক গভীর হয়। মাটিতে পানি থাকে বেশি। এ ছাড়া মই দিলে জমি সমান হয় ভালো। এতে ফসল বেশি ফলে। এই শাহারুলের জমিতেই হালচাষ করছিলেন মোজাম্মেল হক। যখন সেখান থেকে চলে আসি তখনও পেছন থেকে ভেসে আসছিল বিস্মৃতপ্রায় এক হাঁক– হু, হট, হট!